নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রায় বিনামূল্যে যেসব ইন্টারনেট প্যাকেজ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে, তাতে নিষেধাজ্ঞা দিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
সংস্থাটি বলছে, এ সেবা নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের অপ্রয়োজনীয় অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
মোবাইল অপারেটরগুলো ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে নানা ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মূল্য তুলনামূলক কম। এসব প্যাকেজেই লাগাম টানল বিটিআরসি।
বিটিআরসি ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের চিঠিটি দেয় ১৪ জুলাই। পরদিন, অর্থাৎ ১৫ জুলাই থেকে নির্দেশনা কার্যকর করতে বলা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করে, এ ধরনের প্যাকেজ বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করছে।
চিঠিতে সই করেন বিটিআরসির উপপরিচালক সাবিনা ইসলাম। চিঠিটি দেওয়া হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে।
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী অপারেটরসমূহ তাদের গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়া–সম্পর্কিত সেবা আংশিক বা কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে প্রদান করতে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে। এসব ফ্রি সোশ্যাল মিডিয়া–সম্পর্কিত সেবা গ্রহণ করে কিছু অসাধু ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের অপ্রয়োজনীয় অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) জাকির হোসেন খান বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিটিআরসি অপারেটরদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখে। বাজারে যাতে স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা বজায় থাকে এবং গ্রাহকেরা যাতে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ।
অপারেটরগুলো জানায়, তাদের বিভিন্ন ইন্টারনেট প্যাকেজের অনেক সময় ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম বিনা মূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমের অল্প মূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেওয়া হয়।
অপারেটরগুলো বিটিআরসির এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, তাঁরা নির্দেশনা পেয়েছেন। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
বাংলালিংকের করপোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার আংকিত সুরেকা জানিয়েছেন, তাঁরা বৃহস্পতিবার নির্দেশনাটি পাওয়ার পর বাস্তবায়ন করছেন।
বিটিআরসির হিসাবে, দেশে মে মাস শেষে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ২১ লাখের কিছু বেশি। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৯ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক, যা মার্চ শেষে ৯ কোটি ৫২ লাখ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আঞ্চলিক টেলিযোগাযোগ গবেষণা সংস্থা লার্ন এশিয়ার জ্যেষ্ঠ পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়ার সঙ্গে কীভাবে অসুস্থ প্রতিযোগিতা হচ্ছে, কীভাবে অপরাধ হচ্ছে, তার প্রমাণও দিতে হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থা প্রমাণ ছাড়া এভাবে নির্দেশনা দিতে পারে না। তিনি আরও বলেন, অপরাধী শুধু বিনা মূল্যের ইন্টারনেট ব্যবহার করে অপরাধ করেন, সেই নিশ্চয়তা দেবে কে?
সান নিউজ/ আরএইচ