খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাসে ডাকাতি ও এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আরও পড়ুন : সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং
শুক্রবার (৫আগস্ট) সংবাদ সম্মেলেনে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার(৪ আগষ্ট) দিবাগত রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড এবং সোহাগ পল্লী থেকে তাদের দুই জন কে গ্রেফতার করা হয়। এই দুজনসহ এ ঘটনায় মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
এ ঘটনায় জড়িত রাজা মিয়াকে (৩২) বৃহস্পতিবার ভোরে টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন : ফের আটক কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী
তিনি এই সময় আরও বলেন, গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার বরাই গ্রাম থেকে ২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঈগল পরিবহণের বাসটির যাত্রা শুরু করে। রাত সাড়ে ১১ টার পর সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামক খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে।
উক্ত স্থানে ৩০ মিনিটের মতো যাত্রা বিরতি শেষে বাসটি পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। তারপর ভিন্ন ভিন্ন স্থান হইতে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত যাত্রী বেশে বাসে উঠে এবং পিছনের দিকে খালি সিটে বসে।
বাসটি বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পার হওয়ার ২০/৩০ মিনিট পরে ইং-০৩/০৮/২০২২ তারিখ রাতে অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় টাঙ্গাইল জেলার সদর থানাধীন নাটিয়াপাড়া এলাকায় রাস্তায় চলন্ত বাসে উক্ত অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ছুরি, চাকু, কাচি সহ আরো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসের ড্রাইভারকে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেধে পিছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে এবং ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
পরবর্তীতে উক্ত বাসটিকে গোড়াই হতে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাতদল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে ডাকাতরা বাসে থাকা ২৪ জন যাত্রীর নিকট হতে টাকা, মোবাইল, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন ইত্যাদিসহ নগদ টাকা ডাকাতি করে নেয় এবং উক্ত বাসে থাকা ০১ জন মহিলাকে বাসের মধ্যে ৫/৬ জন ডাকাত সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
আরও পড়ুন : পেলোসির ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা
টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর রাত ৩টা ২৫ মিনিটে মধুপুরের রক্তিপাড়া নামক স্থানে এসে বাসটির গতি কমিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর স্তূপে ধাক্কা খেয়ে কাত হয়ে পড়ে। শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।
এই সংক্রান্তে ৩ আগষ্ট মধুপুর থানার মামলা একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং-০৩, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) ধারা- ৯(৩) রুজু হয়।
উক্ত ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার ঘটনাটি লোমহর্ষক এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় অফিসার ইনচার্জ ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইল এর নেতৃত্বে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার রহস্য উঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করার জন্য ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইলের একটি চৌকস টিম নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
সান নিউজ/এইচএন