সান নিউজ ডেস্ক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে হবে।
আরও পড়ুন : ধর্মান্ধ হলে ইরাক-আফগান হতো দেশ
রোববার (২৪ জুলাই) সিইসি নির্বাচন কার্যালয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে এমন মন্তব্য করেন।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম আবু নাছের তালুকদারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবং চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের কী কী ক্ষমতা আছে, এগুলো আমরা দেখছি। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, যে ক্ষমতা আমাদের আছে তার মধ্যেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আমরাও দেখেছি ভোটাররা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। গণতন্ত্রকে যদি বাঁচিয়ে রাখতে হয়, গণতান্ত্রিক চেতনাকে যদি বাঁচিয়ে রাখতে হয়, যারা ভোটার তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে হবে। আর যদি ওনারা ভোটকেন্দ্রে না আসেন, তাহলে বোঝা যাবে গণতন্ত্রের অসুস্থতা রয়েছে।
আরও পড়ুন : ম্যানিলায় গুলিতে মেয়রসহ নিহত ৩
এটা আপনাদের সঙ্গে আমি একমত। কারণ আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের শাসন। প্রজারা সরাসরি শাসন করে না, তারা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে শাসন করে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না। আমরা আইন ও বিধির আলোকেই ক্ষমতা প্রয়োগ করব। আমরা শাসনতান্ত্রিকভাবে দেখব। অবাধ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের চেষ্টা চালাব।
সবাইকে আহ্বান জানাব, আমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে কেবল তার ওপর নির্ভর করলে হবে না; আপনাদের যে দায়িত্ব রয়েছে সমবেতভাবে সেই আরাধ্য কাজটা অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে আমরাও শক্তি পাব। আমরা ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পুরোপুরি দিতে পারব।
আরও পড়ুন : দেশে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু
নির্বাচন কমিশনকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৯টি প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবগুলো হলো :
১। সংবিধান মোতাবেক একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, স্বয়ংসম্পূর্ণ, শক্তিশালী ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা।
২। নির্বাচনের সার্বিক কর্মকাণ্ডকে সরকারের সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত ও নির্বাহী বিভাগের আওতামুক্ত রাখা।
৩। কমিশনের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজন মোতাবেক সামরিক, আধা সামরিক ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনী সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকা।
৪। নির্বাচন কমিশনের সব পরামর্শ-নির্দেশ রেডিও-টেলিভিশনসহ সকল সম্প্রচার মিডিয়া ও কর্তৃপক্ষ যথার্থ প্রচারে বাধ্য থাকা।
৫। এ সংক্রান্ত আইনের একটি চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়নের পর অধ্যাদেশ আকারে জারি করে এটা বলবত এবং পরে তা সংসদে অনুমোদন করা।
৬। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া। এ ক্ষেত্রে কমিশনের নিজস্ব লোকবলকে নিয়োজিত করা।
আরও পড়ুন : পানির দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ!
৭। নির্বাচনে অবাধ কালো টাকার ব্যবহার রোধ ও ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তি প্রদর্শনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৮। সারা দেশে একইদিনে ৩০০ আসনে নির্বাচন না করে ৩ দফায় আয়োজন করা।
৯। ইভিএমের যান্ত্রিক ত্রুটি সারানো এবং সব ধরনের জটিলতা নিরসনসহ এ বিষয়ে ভোটারদের প্রশিক্ষিত করে ভোট কারচুপি ও জালিয়াতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। তাহলেই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে দ্বিধা-সংশয়ের অবকাশ থাকবে না।
সান নিউজ/এইচএন