সান নিউজ ডেস্ক: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। একইসঙ্গে তেল-গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের নিয়তি বদলাতে পারবে না
বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক অডিওবার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, আমরা বেশ কয়েক দিন ধরেই লক্ষ করছি, ৬-৭ মাস ধরে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি। যে তেল আমরা ৭০ থেকে ৭১ ডলারে কিনতাম সেটা এখন ১৭১ ডলার হয়ে গেছে। সেটা সব সময় বাড়তির দিকেই যাচ্ছে। আমরা বলে আসছি প্রথম থেকেই যে আমরা জ্বালানি তেলের দামে সমন্বয়ে যাব। আমরা নিজেদের অর্থে দিয়ে যাচ্ছি ভর্তুকিটা। তার পরও আমার মনে হয় আমাদের একটা সময় দামের সমন্বয় করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। তেলের মূল্য তারা সমন্বয় করেছেন, ভারতের কথাই বলি পার্শ্ববর্তী দেশ, তাদের প্রায় ৩৫ থেকে ৫০ টাকা ডিফারেন্স লিটারপ্রতি বিভিন্ন তেলের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত হলো ২৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুতের পাওয়ার প্লান্ট গ্যাস দিয়ে চলে। আমাদের যে নিজস্ব ন্যাচারাল গ্যাস আমরা দিনদিন বাড়াচ্ছি আবার দিনদিন কমছে দুটো দিকই আছে। যেটা আমরা বাড়াচ্ছি যে খনিগুলো থেকে গ্যাস পাচ্ছি সেটা খুব স্বল্প পরিমাণে কিন্তু কমছে খুব দ্রুতগতিতে। আমি ৫ বছর আগে থেকে বলে আসছি ধীরে ধীরে গ্যাস কমতির দিকে যাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, বড় কথা হলো আমরা যে অ্যাডজাস্টমেন্টটা করতাম, যে ঘাটতিটা ছিল গ্যাসে সেটা আমরা ইমপোর্ট গ্যাস দিয়ে পূরণ করতাম। এর মধ্যে আমার দুটি ধারা, একটি হলো লংটার্ম কনট্যাক্ট, সেই প্রাইসটা ফিক্স করা। তুলনামূলক এই দামটা তেলের সঙ্গে ওঠানামা করে। আরেকটা হলো স্পট মার্কেট। এই মার্কেটের ডিমান্ড বেড়ে গেছে প্রচণ্ডভাবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল এবং গ্যাসের দাম প্রচণ্ডভাবে এফেক্ট করেছে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশ গ্যাস নেয় রাশিয়া থেকে। সেটা তারা এখন বন্ধ করে দিচ্ছে বলেই সব দেশ এই গ্যাসের ওপর (স্পট মার্কেট) প্রচণ্ডভাবে নির্ভরশীল হয়ে গেছে। এ কারণে যেটা চার ডলারের গ্যাস সেটা ৩০ ডলার হয়ে গেছে স্পট মার্কেটে। সেটা কিনতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অর্থের জোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকারি ভর্তুকি দিয়েও এটা সম্ভব হবে না, এই পরিমাণ অর্থ জোগান দেওয়া।
আরও পড়ুন: ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রা
আমরা যদি শুধু দাম বাড়াতেই থাকি তাহলে সাধারণ মানুষের ওপর প্রচণ্ডভাবে চাপ তৈরি হবে। আমি আগে থেকেই বলে আসছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা হয়ে থাকে। যার কারণে আমরা গ্যাসে সামান্য পরিমাণ মূল্য সংযোজন করেছি। এখনও আমরা তেলের ব্যাপারে করি নাই। আমি আশা করবো সকলেই বিষয়টি বুঝতে পারবেন এবং ধৈর্য ধরবেন। এটা খুব সাময়িক। এটা খুব দীর্ঘকালের জন্য না। আমাদের প্রচুর পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে। কিন্তু আমরা গ্যাসের কারণে সেগুলোতে আমরা পাওয়ার জেনারেশন কমিয়ে দিয়েছি। আমরা প্রায়োরিটি দিয়েছি গ্যাসটাকে যে সার উৎপাদনে বেশি খেয়াল রাখবো এবং আমরা ইন্ডাস্ট্রিতে গ্যাসটা বেশি দেবো।
সবাইকে গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সবাই যদি একটু গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হন, তাহলে এটা অবশ্যই আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নিশ্চই আপনারা ভরসা রাখেন, আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা রাখেন নিশ্চই অল্পসময়ের মধ্যে আমরা এই বিপদমুক্ত হবো।
সান নিউজ/এনকে