এম.এ আজিজ রাসেল : কক্সবাজারে মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণে বিজিবির জব্দ করা বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রকার মাদক ধ্বংস করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ শত ৯৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন : ক্যাম্পাসে লাশ ফেলার ষড়যন্ত্রে বিএনপি
শুক্রবার (২৭ মে) সকালে বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন সদর দফতর প্রশিক্ষণ মাঠে ‘মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ’ অনুষ্ঠানে এসব মাদক ধ্বংস করা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মাদকরোধে কঠোর হতে কঠোরত হতে হবে, অপরাধীদের কোন দলীয় পরিচয় নেই। সীমান্ত হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং। মিয়ানমার সীমান্ত রয়েছে ২৭৪ কিলোমিটার। তাই, সীমান্তে কাজ করা অনেক দূরহ ব্যাপার। তাই, বিজিবিকে হেলিকপ্টার থেকে শুরু অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।’
বিজিবির মহা পরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সে নীতিতে কাজ করছে সরকার। মাদক সমাজকে ধ্বংস করছে। এতে পরিবার ও একটি দেশ ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়। তাই মাদকের সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। তাদের বিচারকার্য সম্পন্ন করা হলে বাকিরাও সতর্ক হবে।’
আরও পড়ুন : পূর্ব তিমুরে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ—বিজিবি—কোস্টগার্ড—মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে। মাদক নির্মূলে কঠোর হয়ে কাজ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে জনপ্রতিনিধি, সমাজপতি সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে শপথ নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে সমাজে যেন মাদক ও মাদক ব্যবসায়ী স্থান না পায়। এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা সম্ভব হলে মাদক নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মতে, ‘মাদক নির্মূলেও সফল হতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে, আমরা সফল হব। আমরা এ যুদ্ধে জয়ী হবো। এজন্য একযোগে কাজ করতে হবে। অন্যথায় নতুন প্রজন্ম পথ হারিয়ে ফেলবে।’
আরও পড়ুন : পিকে হালদারের বিচার দু'দেশের আদালতে
বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার নাজম—উস সাকিব জানান, ‘কক্সবাজার রিজিয়নের ব্যাটালিয়নদের গত এক বছরে জব্দ করা ৯০ লাখ ৮০ হাজার ৪৭৭ পিস ইয়াবা, ২৩ কেজি ৭৫২ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ৬ হাজার ৭৬৭ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩৩৯ বোতল মদ, ১৫৪ বোতল ফেনসিডিল, ২০৬ লিটার বাংলা মদ, ১৭ কেজি গাঁজা, ৪৮ হাজার ১৯ পিস বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট, ১০ হাজার ৯৮৪ প্যাকেট সিগারেট এবং ৭ বোতল অ্যামোনিয়াম সালফার ধ্বংস করা হয়। এর আনুমানিক বাজারমূল্য ৩৯৫ কোটি ৭৬ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭৫ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আটক ১ হাজার ৯৭৯ জন আসামিসহ ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৩০ পিস ইয়াবা, ২৭ কেজি ৪৪৮ গ্রাম আইস, ১ হাজার ৩০৫ ক্যান বিয়ার, ৯৮ বোতল মদ, ১৩৭ বোতল ফেনসিডিল, ৫৮৬ লিটার বাংলা মদ, ২২ কেজি ৯৯৫ গ্রাম গাঁজা এবং ৩ হাজার ১৫০ কেজি আফিম মামলার মাধ্যমে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এগুলোর বাজারমূল্য আনুমানিক ৫১০ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজার ৫৭২ টাকা।
আরও পড়ুন : যুবদলের নেতৃত্বে টুকু-মুন্না
এসময় কক্সবাজার সদর—রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী—কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মো: ফখরুল আহসান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার রেজোয়ান হায়াত, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ, পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান কক্সবাজার র্যাব— ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকারসহ উচ্চপদস্থ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে চেকপোস্টের কার্যক্রমের ওপর ডেমো ও রিজিয়নের বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সান নিউজ/এইচএন