সান নিউজ ডেস্ক : ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন : চলে গেলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে তিনি এ শোকবার্তা দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
সংবাদ মাধ্যমকে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন : সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ শিশু নিহত
১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর আবদুল গাফফার চৌধুরী বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন।
১৯৫০ সালে গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মহিউদ্দিন আহমদ ও কাজী আফসার উদ্দিন আহমদ তখন ‘দৈনিক ইনসাফ’ পরিচালনা করতেন।
১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।
আরও পড়ুন : আসামে বন্যায় ৯ জনের প্রাণহানি
বরেণ্য এই সাংবাদিক মাসিক সওগাত, দিলরুবা, মেঘনা, ইত্তেফাক, আজাদ, জেহাদ ও পূর্বদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন।
এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক জনপদ বের করেন।
আরও পড়ুন : ইসলামপুরে মেলার নামে রাতভর জুয়া-মাদকসেবন
১৯৭৩ সালে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে যান। এরপর তার প্রবাসজীবনের ইতিহাস শুরু হয়।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে আছে ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’।
আবদুল গাফফার চৌধুরী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন : ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকট সৃষ্টি করতে পারে
১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।
সান নিউজ/এইচএন