গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
করোনাকালে নিজের নিরাপত্তার কথা না ভেবে দিন-রাত জনগণের সেবায় ব্যস্ত থাকছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাহফুজুর রহমান। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই উপজেলাবাসীর পাশে থেকে লড়াই করে যাচ্ছেন এই করোনাযোদ্ধা।
কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মাঝে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন দিন-রাত। যেখানেই মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন, সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন। সমস্যার সমাধানে নিচ্ছেন নানা পদক্ষেপ। ইউএনও এস এম মাহফুজের এই মানবিক কার্যক্রমে খুশি উপজেলাবাসী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই তার কার্যক্রমের ছবি পোস্ট করে প্রশংসা করেছেন।
করোনার কারণে গত বোরো মৌসুমে ধানকাটার শ্রমিকের সংকট দেখা দিলে 'চাষির হাসি সেল' নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলেন ইউএনও। এই পেজে ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ নিবন্ধন করেন। নিবন্ধনকৃত নারী-পুরুষেরা বিনা পারিশ্রমিকে উপজেলার দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দেন। উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের তরমুজচাষিদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে অনলাইনে তরমুজ বিক্রির ব্যবস্থা করেন তিনি। অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেন চাষিরা।
এদিকে ত্রাণ বিতরণের জন্য উপজেলায় কর্মরত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে 'টিম কোটালীপাড়া ' নামে একটি গ্রুপ গঠন করেন ইউএনও। গ্রুপটি উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কর্মহীন মানুষদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।
উপজেলার কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, কান্দি ইউনিয়নের উত্তম বাড়ৈ, কলাবাড়ি ইউনিয়নের মাইকেল ওঝা ও রামশীল ইউনিয়নের খোকন বালা বলেন, ‘ইউএনও এস এম মাহফুজুর রহমান একজন মানবিক ব্যক্তি। করোনার শুরু থেকে তিনি উপজেলাবাসীকে বিরামহীনভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ও ‘টিম কোটালীপাড়া’ এর সদস্যদের কারণে আমরা এই দুর্যোগকে সহজেই মোকাবেলা করতে পারছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘মানবসেবার ব্রত নিয়েই চাকরিতে এসেছি। আমি এ উপজেলাবাসীর জন্য যেটা করছি, তা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকেই করছি। একজন মানুষ অন্য একজন মানুষের জন্য যেটা করে আমি তাইই করছি। ভবিষ্যতেও মানবসেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে চাই।’
সান নিউজ/ এআর