সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশকে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেজন্য আমাদের বন্ধুদেশগুলো থেকে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ৮ জনের যাবজ্জীবন
মঙ্গলবার (১০ মে) গণভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সভায় এসব কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে অংশ নিতে ঢাকায় সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যদের স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তির তৈরিতে আমাদের মনোযোগের ফলে এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থ ভাগাভাগির ভিত্তিতে। এটি আমাদের সম্প্রসারিত সামগ্রিক ব্যবসায়িক সম্পর্কের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে। উপযুক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগের জায়গা। ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি, আমরা বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-কানুনগুলোকে আপগ্রেড ও সহজ করেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত।
আরও পড়ুন: ফতুল্লায় বিস্ফোরণে চার জন দগ্ধ
নানা সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। আমরা কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগের উন্নয়ন করছি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি। আপনারা যদি চান তবে আমরা একচেটিয়াভাবে আপনাদের জন্য বিশেষ জোন চিহ্নিত করে দিতে পারি।
সরকারপ্রধান বলেন, গত পাঁচ বছরে আমাদের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। রপ্তানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ সালের ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১২-২০২২ সালে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি ইউএস কোম্পানিগুলো এই সুবিধা গ্রহণ করবে এবং শক্তি ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন এবং ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক ইত্যাদির মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে আপনারা নিশ্চিতভাবেই মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো দেখেছেন। এগুলো আরও বেশি বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে বলে আশা করছি। আমার সরকার আমাদের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করছে। এটিকে বিশ্ব অর্থনীতিবিদ এবং সংস্থাগুলো টেকসই হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গাঁজাসহ গ্রেফতার ২
‘আমি বিশ্বাস করি, ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স যেটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা হয়েছিল, তা উভয় দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। একইভাবে প্রস্তাবিত ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স আমাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় দেশের কোম্পানির সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে অবদান রাখবে।’
বাংলাদেশ এখন আরএমজি, চামড়া, প্লাস্টিক, পাট, আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং আরও অনেক কিছুর মতো অত্যাধুনিক উৎপাদন কারখানার জন্য স্বীকৃত। যোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মিশন লিড জে আর প্রায়র, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।
সাননিউজ/এমআরএস