সান নিউজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মঙ্গলবার (১০ মে) দুর্বল হতে পারে। এদিন সন্ধ্যার মধ্যে এর তীব্রতা কমে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। যদি এটি উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেয় তবে অশনি আরও দুর্বল হয়ে আগামী ১২ মে’র দিকে উড়িষ্যা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আরও পড়ুন: বিদেশে কান্নাকাটি না করে আমার কাছে আসুন
সোমবার সকালে (৯ মে) ‘অশনি’ ভারতের বিশাখাপত্তনম উপকূল থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দূরে ছিল। বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকে বহাল রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুর ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি। কালকে হয়তো সবকিছু পরিষ্কার করে বলা যাবে। এখন যেভাবে এগোচ্ছে তাতে ভারতীয় উপকূলের দিকে যাওয়ার কথা। এখন এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে উপকূলের দিকে যাচ্ছে। এরপরও যদি এটি গতিপথ পরিবর্তন করে তবে তা উড়িষ্যা উপকূলের দিকে যেতে পারে। তখন হয়তো এটি পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘অশনি’র প্রভাবে বাড়বে বৃষ্টি
তিনি আরও বলেন, এটি আরও ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এটি আর হয়তো শক্তিশালী হবে না। কারণ এরই মধ্যে এর প্রভাবে বৃষ্টি হওয়া শুরু হয়েছে। তবে এটি যতক্ষণ পর্যন্ত সাগরে আছে ততক্ষণ কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়, যে কোনো মুহূর্তে গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় থেকে আসা মেঘের কারণেই ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, উপকূলের দিকে ও এর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি থাকতে পারে।
এর আগে সোমবার সকালে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ১২ মে ‘অশনি’ নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
এখন ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার তা অনেকটাই কমে যেতে পারে। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের মেঘে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এ সময়ে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
এছাড়া পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, খুলনা ও যশোর জেলাসহ সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়।
সান নিউজ/এনকে