নিজস্ব প্রতিনিধি:
করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে ফুলেল শ্রদ্ধায় হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করা হয়েছে। বুধবার (১ জুলাই) সকাল থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে নিহতের উদ্দেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বেলা ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিহতদের কারও পরিবারের সদস্যদের হলি আর্টিজানে আসতে দেখা যায়নি।
ঘটনার চার বছর পূর্তিতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের শেষ স্থাপনাটিতে অন্যান্য বছরের মতো সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। জাপান, ইতালি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের বাইরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হলি আর্টিজানে আসেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হন। জঙ্গিদের প্রতিহত করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার ও একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। ঘটনার পরদিন ভোরে (২ জুলাই) সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।
বুধবার (১ জুলাই) সকাল থেকেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল গুলশান-২ এর ওই এলাকা জুড়ে। ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রবেশের আগে রাস্তার মোড়ে ব্যাকিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাকে গুলশাল পুলিশ। পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিদেশি দূতাবাসের কেউ কথা বলেননি। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘হলি আর্টিজান হামলার পর আমরা একের পর এক জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। জঙ্গিদের সক্ষমতা যে পর্যায়ে ছিল সেটি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে। ইমপ্রোভাইজড বোমা বানানোর মতো এক্সপার্ট এখন আর নাই। তারা কেউ জেলে আছে অথবা বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে। তাদের ছোটখাটো সক্ষমতা থাকতে পারে। কিন্তু বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা নেই।’
হলি আর্টিজানে হামলার পর বাংলাদেশ পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং একই জঙ্গিবাদে জড়িতদের সক্ষমতা সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
করোনা পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা অনলাইনে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে এবং তাদের প্রতিহত করা হচ্চে জানিয়ে কমিশনার বলেন, ‘করোনাকালে স্বাভাবিকভাবে মানুষ বাসায় বেশি থাকে। তারা অনেকেই ধর্মীয় সাইটগুলোতে বেশি ভিজিট করছে। এই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি। কাউকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে বা জঙ্গিবাদের কার্যক্রমকে পরিচালনার জন্য যে ধরণের সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন সেধরনের কোনও সংগঠন আবার গড়ে তুলতে পেড়েছে সেরকম কোনও তথ্য আমাদের কাছে নাই।’
র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এক ধাপ এগিয়ে আছি। জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা যখনই কোনও পরিকল্পনা করছে, তখনই আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে কাজ করছি এবং তাদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছি। বর্তমানে জঙ্গিবাদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’