সান নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগ ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। এছাড়া কোনো সরকার তা করেনি, বরং প্রাণহানি ঘটিয়েছে। শনিবার (২৬ মার্চ) বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চার দিনব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গৌরীপুরে ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা
দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এদেশের জনগণের প্রতি তারা বারবার ভোট দিয়ে আমাদের তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আর সেজন্যই আজকে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করার সুযোগ পেয়েছি। ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সুযোগ পেয়েছি। যদিও করোনার কারণে আমাদের অনুষ্ঠান সীমিত আকারে করতে হয়েছে। আমরা ২০২২ সাল পর্যন্ত নিয়ে এসেছি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের ব্যাপক উন্নতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষমতায় ছিলেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে তিনি উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তখন এই দেশের মানুষ কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়। আবার ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি পুনরায়, তখন থেকে এই ১৩ বছর, ১৩ বছরে আমরা যে লক্ষ্য স্থির করেছি, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যাতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়, আমরা আজকে স্বল্পোন্নত দেশ। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, আমাদের দেশে মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছি। সারা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আমরা আলোকিত করেছি। বাংলাদেশ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: এমপি হতে চান জায়েদ খান
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি বাংলাদেশের ইতিহাস দেখি, সেই ৭১ থেকে ৭৫ সাল এবং ৭৫ এর ১৫ আগস্টের চরম আঘাত। তারপরে অন্ধকারের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তার স্বাধীনতার চেতনা, জয় বাংলা স্লোগান, ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর নাম নিষিদ্ধ, ছবি নিষিদ্ধ, ২১ বছর এভাবে বাংলাদেশের বিজয়ের ইতিহাস পদদলিত হয় এবং অন্য ইতিহাস জানানোর চেষ্টা করা হয়। ইতিহাস কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আর সত্যের জয় হয়। এটা কেউ কখনো বাধা দিয়ে থামিয়ে দিতে পারে না। আজ সেটাই হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেছিলেন বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেছিলেন। এখনকার পিলখানা হেডকোয়ার্টার পিপিআর এই ফাঁড়ি থেকে তিনি এ ঘোষণা প্রচার করেছিলেন। সেই স্বাধীনতার ঘোষণা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং বিভিন্ন পুলিশ স্টেশনের মাধ্যমে সংগ্রাম পরিষদের হাতে ওই ভোররাতের দিকে বার্তা পৌঁছে দেয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ব্যাপক প্রচার শুরু করে সেদিন থেকে। ২৬ মার্চ থেকে এ ঘোষণার সাথে সাথেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে তারা নিয়ে যায় পাকিস্তানে এবং বন্দি করে রাখে। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দেয়। তাকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
সান নিউজ/এমকেএইচ