সান নিউজ ডেস্ক:
এবার ১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশের মৌসুম। মৎস অধিদপ্তরের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাস থাকবে ইলিশের মৌসুম।
এ সময়ে বছরের মোট আহরণের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি ইলিশ ধরা পড়বে বলে জানা গেছে।
করোনার প্রভাবে লকডাউনে দূষণমুক্ত নদনদী, টইটম্বুর পানিতে অবাধ সাঁতারের সুযোগ আর জাটকা ধরায় বিধিনিষেধের কারণে স্বাদে-গন্ধে, গুণে-মানে সেরা ইলিশই এবার বাজারে আসবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
এবার পরিবেশ-পরিস্থিতি ও আবহাওয়া সবই ইলিশের অনুকূলে থাকায় চকচকে রুপালি ইলিশের স্বাদ পাবেন রসনাবিলাসীরা।
ইলিশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্চের শেষভাগ থেকে করোনাভাইরাসে লকডাউনে আপাত দূষণমুক্ত নদনদীর পানি। আবার ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে নদীগুলো থেকেছে কানায় কানায় পূর্ণ। প্রতিকূল অবস্থায় বরাবরের মতো নদীতে অনবরত জেলের জালও পড়েনি। বন্ধ হয়ে যায় বহু কলকারখানা।
পদ্মা-মেঘনা-যমুনাসহ বড়ো নদীতে লঞ্চ, স্টিমার, ট্রলারের চলাচল ও দূষণ বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে এবার ইলিশের ফলন হবে বাম্পার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার ইলিশ শুধু শুধু স্বাদে-গন্ধে নয়, আকারেও থাকবে বড়ো। কারণ, বৃষ্টি আর পুবালি বাতাসের যুগলবন্দিতে সাধারণত ইলিশ মেলে। মৌসুমি বায়ু সময়মতো সক্রিয় হওয়ায় এবার সার্বিক আবহাওয়া ইলিশের অনুকূলে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের প্রভাষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, এবার ইলিশ প্রাপ্তির সম্ভাবনা বেশি তৈরি হয়েছে। ইলিশের স্বাদ মূলত দুটো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। মাছের খাবার আর পানির গুণগত মান। এ বছর দুটোই ইলিশের জন্য অনুকূলে। কাজেই এবার কিন্তু ইলিশের স্বাস্থ্য ও স্বাদ ভালো হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
ইলিশ গবেষকরা বলছেন, ইলিশ গভীর সমুদ্র থেকে নদীতে ঢুকতে শুরু করেছে এখন। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে ইলিশের ঝাঁক। শেষের দিকে এসে তারা পোনা ছাড়ে। এই যাত্রাকে পরিযান বলে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ এক প্রান্ত থেকে দৌঁড়ে বেড়ায় অন্য প্রান্তে। সমুদ্রের নোনাপানি থেকে ইলিশ যত নদীর উজানে যেতে থাকে, ততই তার শরীর থেকে ঝরতে থাকে আয়োডিন, লবণের মতো খনিজ পদার্থ।
পরিযানের সময়ে ইলিশ কিছু খায়ও না। তাই ইলিশ যত বেশি মিষ্টি পানিতে দৌড়াবে, তত তার দেহ থেকে কমবে লবণসহ বিভিন্ন খনিজ।
সান নিউজ/সালি