সান নিউজ ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পৃথিবীতে সবসময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৪০ এর দশকে এক আনায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেত। তারপরও কিন্তু লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। গত কয়েক দশকে সমগ্র পৃথিবীতে খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশিরা
রোববার (৬ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির চেয়ারম্যান ও দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। এতে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কবি মুহাম্মদ সামাদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি দেখলাম গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক রহমানের শাস্তির মধ্যে আটকে থাকা রাজনীতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা দেখাচ্ছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তারা সারা দেশে সমাবেশের আয়োজন করছেন।
তিনি আরও বলেন, ভারতে বেড়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উত্তর আমেরিকায় বেড়েছে, ইউরোপে বেড়েছে, যুক্তরাজ্যে বেড়েছে, সমগ্র পৃথিবীতে বেড়েছে। বাংলাদেশেও বেড়েছে, তবে তাদের তুলনায় সে রকম নয়। দেখতে হবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কি না।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করে আনন্দ পাই
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যখন ছাত্র রাজনীতি করেছি তখন স্লোগান দিয়েছি- শ্রমিকের বেতন হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের মূল্যের সমান। কারণ তখন একজন শ্রমিক একদিনে যে বেতন পেতেন- তা দিয়ে তিন কেজি চালও কিনতে পারতেন না। যারা তখন কমিউনিস্ট পার্টি করতেন তারাও স্লোগান দিতেন সাড়ে তিন কেজি চালের সমান একদিনে শ্রমিকের মজুরি হতে হবে। আজ একজন শ্রমিক চট্টগ্রামে ৮০০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। আর দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৫০০ টাকার নিচে মজুরি নেই। মোটা চালের কেজি ৪১-৪২ টাকা। সেটা হিসাব করলে একজন শ্রমিক একদিনের মজুরির টাকায় ১২-১৫ কেজির বেশি চাল কিনতে পারেন।
তিনি বলেন, ঢাকাতে একজন রিকশাচালক সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক বেলা কাজ করলে এক হাজার টাকা আয় করতে পারেন। তিনি ইচ্ছে করলে একদিন রিকশা চালিয়ে অন্যদিন বসে থাকতে পারেন। বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২৬০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে চারগুণ বেড়েছে। আর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটা অন্য আয়ের মানুষেরও। প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: গুঁড়িয়ে গেল ইউক্রেনের বিমানবন্দর
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই তাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে রূপান্তর হতো। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় নি, তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশ উন্নত হওয়ার পথকে রোধ করেছে।
তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে ৯২তম। এই দেশ ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা, জলোচ্ছাসসহ জলবায়ু পরিবর্তনের দেশ। কিন্তু বাংলাদেশ আজ ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম। এটি কোনো জাদুর কারণে নয়, বরং জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ