নিজস্ব প্রতিবেদক:
অধিকার আদায়ের পাশাপাশি যে কোনো দুর্যোগে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের পাশে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান কাটছাঁট করার বিষয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম হবে, এ ধরনের সব কর্মসূচি বাতিল করেছি। কারণ, আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণটাই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটাকেই আমরা গুরুত্ব দিই।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ কেক কাটা, শোভাযাত্রা অনুষ্ঠান, শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভাসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন করে থাকে। এবার মুজিব বর্ষের কারণে আয়োজন আরও জাঁকজমপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব কর্মসূচিই বাদ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন ইতিহাস বর্ণনা করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ প্রতিষ্ঠাতাদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের কথা, মানুষের অধিকারের কথা বলেছে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছে।
তিনি বলেন, ‘১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই সূর্য উদয় হয় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতাসংগ্রামের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করেছেন এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের জন্য। তিনি তাঁর সংগ্রামের পথে অনেক বাধা, বিপদ অতিক্রম করেছেন।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, বাঙালি কিছু পেয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। এ ছাড়া অন্য সময় পেছনে টেনে রাখার চেষ্টা হয়েছে।
জাতির পিতাকে স্মরণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ পারেনি। অবশ্য সত্যকে মোছাও যায় না। জাতির পিতা শারীরিকভাবে আমাদের কাছে নেই। তাঁর অস্তিত্ব বাঙালির হৃদয়ে আছে। তাঁর যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা আমাদের পূরণ করতে হবে। আজকের দিনে এটাই শিক্ষা। বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আইয়ুব খানের সব রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙে দিয়ে জনগণের ক্ষমতায়ন ও ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তা সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। তাঁর অসমাপ্ত কাজটা শেষ করা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালনের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করি। এটা নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা পালন করতে পারিনি। আজকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সীমিত আকারে উদ্যাপন করছি।’