সান নিউজ ডেস্ক:
শিক্ষার্থীদের জন্য শুল্কমুক্ত মোবাইল কলের দাবি করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)। সোমবার (২২ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ মিলিয়ে মোট ৬৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষাখাতে এ বছরে বরাদ্দ ১১.৬৯ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ০.০১ শতাংশ বেশি। এছাড়া বাজেটে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে এক লাখ তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজও রয়েছে। বিশ্বব্যাপী গভীর দুর্যোগপূর্ণ এই সময়ে এমন একটি আশাবাদী বাজেটের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশ্বজুড়ে মহামারির প্রকোপ সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট। এ কারণে ব্যবসায়ের গতিবদল হচ্ছে, বদলে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাও। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন অনলাইনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও গত মার্চের শেষদিক থেকে অনলাইনে পাঠদানে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তবে বাজেটে মোবাইল কলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব কার্যকর করায় তা মোবাইল ইন্টারনেটের জন্যও প্রযোজ্য হয়েছে। এই প্রস্তাব অনলাইনে পাঠ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হুট করে নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
এ কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির পক্ষ থেকে জনকল্যাণে জনবান্ধব বাজেটের ব্যাপারে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শিক্ষার্থীদের জন্য এই শুল্ক মওকুফসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।
প্রস্তাবগুলোতে বলা হয়−
১. মোবাইল কলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্যে এই শুল্ক পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহার করার জন্যে জোর দাবি জানিয়েছে এপিইউবি। একইসঙ্গে সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সব ক্যাম্পাসে উচ্চমাত্রার/উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা বিনামূল্যে দেওয়ার আবেদনও তারা করে।
২. একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্যে অতি সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেটের ‘বিশেষ শিক্ষা প্যাকেজ’-এর জন্যেও ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর ইতোমধ্যে আবেদন করেছে এপিইউবি। তাদের দাবি অনুযায়ী অন্যান্য গ্রাহকের ক্ষেত্রে যেভাবে ইন্টারনেট প্যাকেজ অফার করা হয় সেভাবে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বিশেষ প্যাকেজ’ অফার করাও সম্ভব এবং এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে একটি আবেদন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সংগঠনটি।
৩. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দিষ্ট হারে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করার লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে একটি থোক বরাদ্দ রাখার অনুরোধ জানানো হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির পক্ষ থেকে। এর মাধ্যমে সাময়িক অর্থ ঘাটতির মুখে সকলের বেতনভাতার সুরক্ষা সম্ভব হবে। এই মর্মে অর্থমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছে সংগঠনটি। বিষয়টি যেন জরুরি ভিত্তিতে সদয় বিবেচনা করা হয় সেটির জন্য পুনর্বার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিতে আরও বলা হয়, ‘বৈশ্বিক মহামারির সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্বে দেশ এই সংকট কাটিয়ে উঠবে, এ বিষয়ে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা পরবর্তী বিশ্বে একমাত্র দক্ষ জনবলই ঘুরে দাঁড়াতে ভূমিকা রাখবে। আমরা যেন সে জায়গায় পিছিয়ে না পড়ি, সেজন্য জননিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, ব্যবসাখাতের পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণাখাতেও সমান নজর দেওয়া জরুরি। আমরা আশা করি শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থের দিকে তাকিয়ে তাদের ওপর মোবাইল কলের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাতিল করা হবে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের অন্য প্রস্তাবগুলোও সদয় বিবেচনা পাবে।’