নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেব ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে।
রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত না থাকতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্ত গুণীজনদের শুভেচ্ছা জানান। পরবর্তী সময়ে দেখা হবে বলেও প্রত্যাশা প্রকাশ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পদক হস্তান্তর করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ আমন্ত্রিত সকল অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
পদক পাওয়া বিশিষ্টজনেরা হলেন—ভাষা আন্দোলনে মোস্তফা এম. এ. মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর), শিল্পকলায় (নৃত্য) জিনাত বরকতউল্লাহ, শিল্পকলায় (সঙ্গীত) নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেণু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ, মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউ এ বি এম রহমান এবং আমজাদ আলী খন্দকার।
এছাড়াও পদক পেয়েছেন সাংবাদিকতায় এম এ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মো. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, সমাজসেবায় এস. এম. আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের, ভাষা ও সাহিত্যে কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ। এছাড়াও গবেষণায় এককভাবে পদক পেয়েছেন ড. মো. আবদুস সাত্তার মণ্ডল, আর দলগতভাবে পুরস্কার পেয়েছেন ড. মো. এনামুল হক (দলনেতা), ড. সাহানাজ সুলতানা ও ড. জান্নাতুল ফেরদৌসী।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ও একুশের চেতনাকে ধারণ করে দেশের শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির বিকাশের মাধ্যমে আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন, তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকার প্রতিবছর একুশে পদক প্রদান করে।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধে অবদান, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখা ব্যক্তি, সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে।
নীতিমালা অনুসারে, নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ চার লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা এবং একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিল্প, সমাজ, গণমাধ্যম প্রভৃতি ক্ষেত্রে নিবেদিতপ্রাণ যেসব খ্যাতিমান বিশিষ্টজন ‘একুশে পদক ২০২২’ পেয়েছেন, তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
‘একুশে পদক-২০২২’ প্রদান উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে আবদুল হামিদ বলেন, ভাষা শহিদদের গৌরবদীপ্ত আত্মত্যাগের স্মৃতিবাহী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে সরকার বাংলাদেশের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্নক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবছর একুশে পদক প্রদান করে। সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজনেরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মানিত করার মধ্যমে দেশে মেধা ও মনন চর্চার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। ভাষা আন্দোলনের মধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল।
সাননিউজ/এমএসএ