নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনার বিপর্যস্ত অর্থনীতির মধ্যেও গ্রামীণ সড়ক আর কালভার্ট নির্মাণের নামে এমপিদের বরাদ্দ দেয়া হলো মাথাপিছু ২০ কোটি টাকা।
সংকটকালীন এই সময়ে অর্থ বরাদ্দে সরকারকে প্রয়োজন বুঝে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। অন্যদিকে, পরিকল্পনা মন্ত্রীর দাবি, জনগণের চাহিদা আছে বলেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
করোনা সংকটে টানা প্রায় আড়াই মাস সাধারণ ছুটিতে অনেকটাই স্থবির ছিলো দেশের অর্থনীতি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আয়ে। শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরেই ঘাটতি প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।
অথচ, এমন প্রেক্ষাপটেই ২৮০ সংসদ সদস্যকে মাথাপিছু ২০ কোটি টাকা করে রাজনৈতিক বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণের নামে সম্পূর্ণ এডিপি বহির্ভূত প্রকল্পের ব্যয় ৬ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা, যা অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
সংকটে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য নাকি অবকাঠামো, এমন প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের জবাব, জনগণের চাহিদা আছে বলেই দেয়া হয়েছে অনুমোদন। অবস্থা খারাপ আপনারা বলছেন।
এ অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী সংকট এড়াতে প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প গ্রহণের পক্ষে অর্থনীতিবিদরা।
তারা বলেন, এখান থেকে অর্থ সাশ্রয় করে স্বাস্থ্যখাত বা করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজে লাগানো যেত।
উল্লেখ্য, এমপিদের জন্য হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেকে বছরে পাঁচ কোটি টাকার পছন্দমতো প্রকল্প দিতে পারবেন। গ্রামীণ উন্নয়নকে মাথায় রেখে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলে সিটি করপোরেশন এলাকার সংসদীয় আসনের এমপিরা এই প্রকল্পের বাইরে থাকছেন। সুনির্দিষ্ট এলাকা নেই বলে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরাও নেই এই প্রকল্পে।
ছয় হাজার ৪৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রকল্পটি জুলাইয়েই শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলের সঙ্গে নিকটবর্তী গ্রোথ সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শিক্ষা কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলার যাতায়াত সুবিধা বাড়ানো হবে। ফলে পল্লী অঞ্চলে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ হবে।
এর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম সরকার গঠনের পর প্রত্যেক এমপি নিজ আসনের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা করে পেয়েছিলেন। সেসময় প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৪ হাজার ৮৯২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এটি ২০১০ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালে জুনে শেষ হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে এমপিদের ২০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এ পর্যায়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬ হাজার ৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে এটি চলমান রয়েছে।
সান নিউজ/সালি