নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত মার্চ মাসের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৯.০৩ শতাংশে নেমে এসেছে। খেলাপি ঋণের এই হার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮.৭৯ শতাংশ। এরপর থেকে টানা পাঁচ বছর অব্যাহতভাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। গত ডিসেম্বরে এই হার ছিল ৯.৩২ শতাংশ। সর্বশেষ মার্চ মাসে খেলাপি ঋণের হার ৯.০৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯.০৩ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, খেলাপি ঋণের হার কমলেও এই সময়ে খেলাপি ঋণ আদায় বাড়েনি। এদিকে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ গ্রাহককে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘খেলাপি’ হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর আগে, ৩০ জুন পর্যন্ত এই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা ওই সার্কুলারে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সব ধরনের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ কোনও গ্রাহককে ‘খেলাপি’ ঘোষণা করা থেকে ব্যাংকগুলোকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ঋণখেলাপিদের গণছাড় দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা জারি করেছিল, তার সুফল মিলেছে গত ডিসেম্বরেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১০ লাখ ১১ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে গেছে, যা ওই সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের ৯.৩২ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
জানা যায়, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে ২০১৯ সালের ১৬ মে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সার্কুলারের আওতায় যেসব ঋণ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মন্দমানে শ্রেণিকৃত রয়েছে, সেসব খেলাপির অনুকূলে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট আদায় সাপেক্ষে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল এবং ৩৬০ দিন মেয়াদে এককালীন এক্সিট সুবিধা প্রদান করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।