নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ এক অধ্যায়। গণঅভ্যুত্থান আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তি সনদ ৬ দফা, পরবর্তীকালে ১১ দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। এর মধ্য দিয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও নিপীড়ন থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে আরও তীব্রতর হয় স্বাধিকার আন্দোলন। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে বন্দি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ঢাকা সেনানিবাসে বিচার শুরু হয়। এ মামলার প্রতিবাদে সারাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে। কারাগারে আটক শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে গর্জে ওঠে বাংলার মানুষ। ১৯৬৯ সালের পুরো জানুয়ারি মাস ছিল আন্দোলনে উত্তাল। ধারাবাহিকভাবে দেশব্যাপী আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র জনতার চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে আসাদুজ্জামান শহীদ হন একইসাথে অনেক আহত হন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করা ও পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের সংকল্প নিয়ে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন এবং সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছিল। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান মল্লিক ও মকবুল, আনোয়ার, রুস্তম, মিলন, আলমগীরসহ আরও বেশ কয়েকজন শহীদ হন। জনতার কঠিন রুদ্ররোষ এবং গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারি আইয়ুব সরকার তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সবাইকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এর মাধ্যমেই আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়। অপশাসন এবং শোষণের বিরুদ্ধে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। গত ১৩ বছরে দেশের আর্থসামাজিক সবখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যন্ত মানুষ উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছেন। জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস উপহার দিয়েছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। একইসাথে ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করেছি। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের সকল পথ বন্ধ করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে রায় কার্যকর হয়েছে। নতুন প্রজন্ম এখন দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময়। আমরা ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আসুন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে গড়ে তুলি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
সাননিউজ/এমএসএ