নিজস্ব প্রতিবেদক: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের ব্যাপারে আমার কাছে প্রথম যে ডকুমেন্ট আছে সেটি হলো- ২০১৫ সালে একিন কোম্পানি অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে। বিএনপির নয়াপল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। মাসিক ৫০ হাজার ডলারের বিনিময়ে এবং এটি তিন বছর অব্যাহত ছিল। বছরে ছয় লাখ ডলার দেওয়া হয়েছে। তিন বছরে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার হয়। এ ধরনের ১০টি ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি করেন তিনি। পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে সত্য কথা ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার দাবি জানান বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তার এই বক্তব্যের জবাবও দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে তাদের হিসাব প্রকাশ করে। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করতে হবে, এই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে গেছে কি না? তা না হলে এতিমের টাকা মেরে খেয়ে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই টাকার ব্যবহার এখানে করা হয়েছে কি না, আমরা সেই তদন্ত চাই।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর যত শক্তিধর রাষ্ট্রই হোক না কেন, তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ক্ষমতা রাখে না। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। আমাদের সমস্যা যদি থাকে আমরা এই পার্লামেন্টে আলোচনা করবো। রাজপথে যাবো। আমরা সেখানে সেটার সমাধান করবো। নির্বাচন কমিশনে যাবো। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাবো।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ আছেন। তার সুস্থতা কামনা করি। তিনি বয়োজোষ্ঠ্য মানুষ। বাংলাদেশের একটা বিষয় আছে, অসুস্থ মানুষের প্রতি আমাদের দিল কেন জানি নরম হয়ে যায়। কিন্তু সেই মানুষটি গ্রেনেড হামলা করে আমার দলের নেতাকর্মীকে সিএমএইচ যেতে দেয়নি, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করতে দেয়নি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি না কি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিহার করেছে। আমি তো রাজশাহীতে দেখেছি প্রতিটি উপজেলাতেই বিএনপির প্রার্থী ছিল। তারপরও রাজশাহীর মতো জায়গায় আমার নির্বাচনী এলাকায় নৌকার প্রার্থী বিজয় হয়েছে ৬টি জায়গায়। নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয় হয়েছে দুটি জায়গায় এবং তাদের (বিএনপি) দলের একজন নির্বাচিত হয়েছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অভূতপূর্ব নির্বাচন হয়েছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে ইভিএম আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে সেই পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। ইভিএমের মাধ্যমে স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক নির্বাচন করা সম্ভব সেটি মাহবুব তালুকদারের মতো নির্বাচন কমিশনারও কিন্তু গতকাল স্বীকার করেছেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে শাহরিয়ার আলম বলেন, তারেক রহমানকে এখনো কীভাবে তারা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন। একজন দুর্নীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কীভাবে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়? পবিত্র কোরআনের আলোকে আমি তার (হারুন) কাছে এ বিষয়ে জানতে চাই।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে আর্টিকেল লিখেছিলেন। কিন্তু এটি প্রকাশ পাওয়ার পর বিএনপির সব নেতাকর্মী অস্বীকার করেছিল যে, এটা খালেদা জিয়ার লেখা নয়।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনকে উদ্দেশ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, অন্ততপক্ষে এখন সংসদে দাঁড়িয়ে পবিত্র কোরআনের আলোকে সত্যটা বলেন। আজকে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন যে, তখন মিথ্যা বলেছিলাম, আমি ক্ষমা চাচ্ছি মহান আল্লাহর কাছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ