নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নিয়ে বিএনপি আসলে নির্বাচনটা বানচাল করতে চায়।
রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসি সড়কদ্বীপে পোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ ও বজ্রকণ্ঠ সংগঠনদ্বয় আয়োজিত দিন বদলের মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে সংলাপের আয়োজন করেছেন যা বিএনপি কখনো করেনি। বিএনপি সেই সংলাপে যাবে না এবং সংলাপের বিরুদ্ধে নানাধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে কারণ আসলে বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করা। তারা যেভাবে ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিলো, ২০১৮ সালে নির্বাচনে ষড়যন্ত্র করেছিলো একইভাবে তারা আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু দেশের মানুষ তাদেরকে সেই সুযোগ দেবে না।’
পোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ সভাপতি এস এম জামাল উদ্দিন ইউসুফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান উদ্বোধক হিসেবে, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বিশেষ অতিথি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: শাহে আলম মুরাদ সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দিন বদল হয়েছে কিন্তু এই দিন বদল অনেকের পছন্দ নয়। দেশের মানুষ ভালো আছে এটি অনেকের পছন্দ নয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা যখন পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করলাম তখন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতারা বললেন, আওয়ামী লীগ করতে পারবে না, তারা ক্ষমতায় গেলে একসাথে দু’টা পদ্মাসেতু করবে। এখন তো পদ্মাসেতু হয়েই গেছে। পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে গাড়ি চালিয়ে এই প্রান্ত থেকে ঐপ্রান্তে গেছেন আবার ঐপ্রান্ত থেকে গাড়ি চালিয়ে এপ্রান্তে ফেরত এসেছেন। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর আমরা অপেক্ষায় আছি, যারা পদ্মাসেতু হবে না বলেছিলো তারা গাড়ি চালিয়ে পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে যায়, না কি আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকায় এপার থেকে ওপার যায় সেটা দেখার জন্য।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা (বিএনপি) ফ্লাইওভার দিয়ে বিমানবন্দরে যায় আর গিয়ে বলে দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই হঠকারি রাজনীতি বন্ধ হওয়া আবশ্যক। গত ১৩ বছরে দেশ আরো অনেক এগিয়ে যেতে পারতো যদি বিএনপি-জামাত এবং তাদের দোসরদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার রাজনীতি, দিনের পর দিন মানুষকে অবরোধ করার রাজনীতি না থাকতো এবং দেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর অপরাজনীতি যদি তারা না করতো। আজ থেকে ১০ বছর পর বাংলাদেশ ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনা করতে চাই, সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছুতে হলে এই অপরাজনীতির অবসান হতে হবে।’
দেশকে এগিয়ে নিতে রাজনীতি স্থিতিশীলতা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনাকে যদি সমুন্নত রাখতে হয় একইসাথে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকে এই কবিতা পাঠের আসর, সংস্কৃতির চর্চা ভবিষ্যতে হবে কি না সন্দেহ আছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে না থাকেন তাহলে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর গলা চিপে ধরা হবে। কারণ বিএনপি-জামাত তাদের সাথে জোট করেছে, যারা এই দেশটাকে তালেবানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। এই অপশক্তির যাতে বিনাশ হয় ও চিরতরে দূরীভূত হয় সেই চেতনা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে একটি সাংস্কৃতিক গণজোয়ার তৈরির জন্য আমি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে অনুরোধ জানাবো। তাহলে নতুন প্রজন্মকে আমাদের আবহমান সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত করতে পারবো, একইসাথে মাদকাসক্তি এবং মৌলবাদ-আসক্তি থেকে তাদেরকে মুক্ত রাখা সম্ভবপর হবে।
আলোচক হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম আশরাফুল ইসলাম মারুফ, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফোরকান মিঞা, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপপরিষদ সদস্য সুজন হালদার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা এবং মেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার আলী আসগর স্বাগত বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে কবিতা আবৃত্তি করেন ড. শাহাদৎ হোসেন নিপু, অসীম সাহা, আসলাম সানি, অঞ্জনা সাহা, তপন বাগচী, রহিম শাহ, বাপ্পি রহমান, ইউসুফ রেজা প্রমুখ।
সান নিউজ/এনএএম