সাননিউজ ডেস্ক: মহাকালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেল ২০২১ সাল। ২১’র সকল দুঃখ-বেদনা ভুলে শুক্রবার দিনগত মধ্যরাতে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন আশা নিয়ে বরণ করলো ২০২২ সালকে। করোনাভাইরাস মহামারির ছায়াতেই বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানালো।
২০২১, ঘটনাবহুল এই বছরও ছিল ২০ সালের মতোই বিষে ভরা৷ চীন থেকে আসা করোনাভাইরাসের দাপটে বেড়েছে মৃত্যুর মিছিল৷ বিনোদন ভুলে মানুষ হলো ঘরকুনো। হাতে উঠলো স্যানিটাইজারের বোতল আর মুখে মাস্ক। বছরের শেষদিকে তার দাপট কমতে না কমতেই নতুন আতঙ্ক অমিক্রন। তারপর আসার পথে ডেলমিক্রণ। টিকা নিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে আছে মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আনন্দে মাতোয়ারা সবাই। লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন সব ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানালো সবাই। বছরের শেষ সূর্যাস্ত নতুন করে মনে করিয়ে দেয় অনেক কিছুই। অনেক স্মৃতি! বলতে গেলে অনিশ্চয়তা নিয়েই নতুন বছরে গোটা বিশ্ব পা রাখতে চলেছে৷ প্রার্থনা, নতুন বছর হোক সুস্থ সূর্যোদয়ের বছর৷ সব বেড়াজাল ভেঙে ফের হেসে উঠুক বিশ্ব।
দুইবছর আগে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে ২৮ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৪ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে আবার গত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রন নামে করোনার আরএকটি ধরণ ইতোমধ্যেই উদ্বেগ বাড়িয়ে চলছে। করোনা ডেলটা এবং ওমিক্রনের সংক্রমনের কারণে অনেক দেশ ইংরেজি নববর্ষের উৎসব বাতিল করছে।
ইংরেজি নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নির্দেশনায় থার্টি ফার্স্ট নাইটে ইংরেজি নববর্ষকে বরণ উপলক্ষে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে সকল ধরণের অনুষ্ঠান সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ উদযাপন করতে নগরবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং উন্মুক্ত স্থানে কোন ধরণের জমায়েত অথবা সমাবেশ বা উৎসব না করা এবং উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।
‘খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২২’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলা নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। খ্রিষ্টাব্দ তাই জাতীয় জীবনে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর নববর্ষকে বরণ করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন করা হলেও করোনা মহামারির কারণে বিগত বছরের মতো এবারের উৎসবের আমেজও অনেকটাই ম্লান।
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে তবে বিশ্বব্যাপী করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সতর্কতা প্রতিপালনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ বাঙালি জাতির জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান-২০২১ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ২০২১ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০-দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করি, যেখানে সার্কভুক্ত ৫টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানগণ সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিয়েছিলেন। তাছাড়া বিশ্বের ৭৭টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানগণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ ভিডিও বার্তা ও অভিনন্দন পত্র প্রেরণ করেছেন, যেখানে সকলেই আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আমাদের সরকারের উদ্যোগে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের রাজধানী এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরে জাতির পিতার নামে স্মারক ভাস্কর্য স্থাপন, সড়ক ও পার্কের নামকরণ করা হয়েছে। ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে সৃজনশীল অর্থনীতিতে আন্তজার্তিক পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।
নববর্ষ মানেই সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বভাবতই নতুন বছর নিয়ে এবারও মানুষের প্রত্যাশা একটি করোনা মুক্ত বিশ^। তবে, করোনার টিকা ছাড়াও অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাসহ মানবসম্পদ তৈরির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে গতবছরের মত আগামী বছরের মোটা দাগের চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, এটাই নতুন ইংরেজি বছরে সবার প্রত্যাশা।
নষ্ট হলো পৌনে ১ কোটি টিকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা প্রতিরোধে দেশে বিনামূল্যে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টিকার প্রথম- দ্বিতীয় ডোজ মিলে ১০ কোটি ৬৬টি লাখ ৯৭ হাজার ৭৬ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে গেছে পৌনে এক কোটি টিকা।
সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) সূত্রে জানা গেছে, দেশে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার কোম্পানির ২০ কোটি টিকা এসেছে। ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট টিকা পেয়েছে ১২ কোটি ২৪ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। এর মধ্যে ৭ কোটি ২৪ লাখ ৪৩ হাজার ৭৩৪ জন পেয়েছে প্রথম ডোজ। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২ হাজার ৫২ জন। সরকারের হাতে এখন ৮ কোটি টিকা মজুত রয়েছে। সংরক্ষণ ও প্রয়োগ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে নষ্ট হয়েছে ৬৭ লাখ ১ হাজার ২৪১ ডোজ টিকা।
তবে শুধু যে বাংলাদেশেই এমন ঘটনা ঘটেছে তা নয়। পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও টিকা নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, টিকা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সংরক্ষণ ও পরিবহনসহ নানা কারণে ৫ শতাংশ টিকা নষ্ট হতে পারে। এর চেয়ে বেশি নষ্ট হওয়াটা গ্রহণযোগ্য নয়। টিকাদান কর্মসূটি বাস্তবায়নে টিকা নষ্ট হওয়া কমাতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ থাকলেও বেশির ভাগ দেশ টিকা নষ্ট হওয়ার হার কমিয়ে আনতে যথাযথ উদ্যোগ নিচ্ছে না।
তবে ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশে টিকা নষ্ট হওয়ার হার কিছুটা কম। দেশে সবচেয়ে কম টিকা এসেছে ফাইজার। এই টিকা নষ্ট হয়েছে ২ হাজার। প্রয়োজ করা হয়েছে ৩৯ লাখ ৯ হাজার ৯৩৯ ডোজ। তাপমাত্র জটিলতায় মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে মাত্র ৩০টি উপজেলায় ৫৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৪ ডোজ। এই টিকা নষ্ট হয়েছে ৮০ হাজার ১০৮ ডোজ।
অস্ট্রাজেনেকা টিকা ৪৮৩টি উপজেলায় ১ কোটি ৯৬ লাখ ১৪ হাজার ১৭৩ ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে এই কোম্পানির টিকা নষ্ট হয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪০০ ডোজ। সবচেয়ে কম নষ্ট হয়েছে চীনে উৎপাদিত সিনোফার্ম টিকা। এই টিকা ৪৮৪ উপজেলায় ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭২ ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। এই টিকা নষ্ট হওয়ার পরিমান ২৩ লাখ ৮ হাজার ৩৩১ ডোজ।
অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে টিকা নষ্ট হওয়ার হার কম থাকাটাকে সাফল্য হিসেবে দেখছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা কারণে টিকা নষ্ট হওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক। পরিবহন, সংরক্ষণ ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা কাটিয়ে টিকা নষ্ট হওয়ার হার কমিয়ে আনতে যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ার কারণে এমন অবস্থা দেখা দিতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইপিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন- ‘টিকা পরিমাণে কম আসা, রং পরিবর্তন হওয়া, সংমিশ্রণে সমস্যা দেখা দেয়া, হাত থেকে পড়ে যাওয়া টিকা নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ। একটি ভায়েলে যে পরিমাণ টিকা থাকে দেয়ার সময় হয়তো সেই পরিমাণ টিকা পাওয়া যায় না।
‘মডার্নার টিকা একটি ভায়েলে ১৪ ডোজ থাকে। তবে প্রয়োগের সময় ১৩ ডোজের বেশি দেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা প্রয়োগ করেও ১৪ ডোজ করা সম্ভব হয়নি। অনেক সময় ইনজেকশন সিরিঞ্জে এক ডোজের বেশি পরিমাণ উঠে আসা। এতে টিকা কিছুটা নষ্ট হয়েছে। তবে অন্য দেশের তুলনায় নষ্ট হওয়ার হার অনেক কম। এই হার গড়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হবে না।’
সংরক্ষণ জটিলতায় টিকা নষ্ট হয়েছে কী না জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘টিকা সংরক্ষণে আমাদের কোনও ধরনের সমস্যা নেই। টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহনের কাজ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) অনেক আগে থেকেই করে আসছে। আমাদের টিকা সংরক্ষণ ও পরিবর্তন ব্যবস্থা অনেক ভালো।’
টিকাদান কর্মসূচি শুরুর দিকে ফাইজার টিকা সংরক্ষণে জটিলতা ছিল। সে কারণে টিকা নষ্ট হয়েছে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফাইজার টিকা সংরক্ষণে ইউনিসেফের মাধ্যমে ২৫টি ফ্রিজার নেয়া হয়েছে। যে কারণে এখন উপজেলা পর্যায়ে এই টিকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।’
টিকা নষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক-এমন মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশে যত টিকা নষ্ট হয়েছে সেগুলো সংরক্ষণ ও পরিবহন কিংবা অন্য কোনও জটিলতায় হয়নি। প্রয়োগের সময় এগুলো নষ্ট হয়েছে। যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও হয়ে থাকে। দশ ডোজের ভায়েলে ৫ শতাংশ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে যদি সিঙ্গেল ডোজের হলে নষ্ট কম হয়। তাই বাংলাদেশে যত টিকা নষ্ট হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী তা বেশ কম এবং খুবই স্বাভাবিক।’
ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘একটি ভায়েলে ১০ ডোজের মতো টিকা থাকে। কিন্তু সবগুলো দেয়া সম্ভব হয় না। প্রতিবার দেয়ার সময় অতিরিক্ত কিছু নিতে হয়, শরীরে বাতাস যাতে না ঢুকে যায় সেজন্য উপর থেকে কিছু ফেলে দেয়া হয়। ফলে প্রত্যাশিত ডোজ দেয়া সম্ভব হয় না। সেজন্য অনেক দেশ আলাদা ভায়েল করে এক ভায়েলকে এক ডোজ বানায়, সেটি ব্যয়বহুল। শুরুর দিকে সিনোফার্মের একটি ভায়েলে একটি ডোজ দেয়া হতো। তখন নষ্ট কম হতো। কিন্তু এটি করতে গিয়ে ভায়েলের খরচ বেড়ে যায়। ভায়েলে ডোজের সংখ্যা কম, টিকা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি ততটাই কম। তাই ভায়েলের ওপর নির্ভর করে কী পরিমাণ টিকা নষ্ট হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে উল্টো ধমকের সুরে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কাগজ আপনি কোথায় পেলেন? কাগজটি আমাকে দিন। আগে আমাকে দেখতে হবে।’
‘একইসঙ্গে কে আপনাকে এই তথ্য দিল সেটাও আমাকে জানতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন ব্যক্তি আপনাকে এই তথ্য দিয়েছে আমাকে বলেন। ‘এ পর্যন্ত কত টিকা নষ্ট হয়েছে সে হিসাব আমাদের কাছে আছে। তবে আপনার এই তথ্যের সোর্স আমাকে জানাতে হবে। আমি সরকারের সোর্স। আমি যা বলবো সেটাই অথেন্টিক।’ অবশেষে টিকা নষ্ট হওয়ার তথ্য স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় সংখ্যাটি অনেক কম।’
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে বিশ্বব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। সবমিলে ২৪ কোটি ১০ লাখ টিকা নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ কোটি টিকা নষ্ট হয়েছে ভারতে। পার্শ্ববর্তী দেশটিতে টিকা নষ্টের এই হার ৬ দশমিক ৩।
বিবিসির তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে নষ্ট হয়েছে দেড় কোটির বেশি করোনা টিকা। নাইজেরিয়ায় টিকা নিতে অনাগ্রহের কারণে শুধু নভেম্বরেই ১০ লাখ ডোজ টিকা নষ্ট হয়েছে।
সাননিউজ/এমআর