নিউজ ডেস্কঃ
করোনাকালীন রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সব হাসপাতাল-ক্লিনিকের জন্য ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৫ জুন) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী এএম জামিউল হক, নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।
হাইকোর্ট তার নির্দেশনায় বলেন:
১. হাসপাতাল-ক্লিনিকে আসা রোগীদের ফেরত না পাঠানো সংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
২. ৫০ শয্যার বেশি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সাধারণ রোগী বা করোনা রোগীদের কতজনকে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
৩. ৫০ শয্যার বেশি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সাধারণ রোগী বা করোনা রোগীদের কতজনকে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা স্বাস্থ্য বুলেটিনের মাধ্যমে তুলে ধরতে বলা হয়েছে।
৪. ৫০ শয্যার বেশি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সাধারণ রোগী বা করোনা রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে মনিটরিং করে প্রতি ১৫ দিন পরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
৫. গুরুতর অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলে তা অবহেলাজনিত মৃত্যু বলে বিবেচিত হবে। অবহেলাজনিত মৃত্যু ফৌজদারি অপরাধ। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
৬. দেশে আইসিইউ বেড কতটি খালি আছে এবং কতটিতে রোগী ভর্তি রয়েছে তা প্রতিদিন জানাতে বলা হয়েছে। আইসিইউর অতিরিক্ত চার্জ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭. আইসিইউ বেড ব্যবস্থাপনার তথ্য করোনাকালীন হেল্পলাইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তথ্য দিতে বলা হয়েছে এবং প্রতিদিন স্বাস্থ্য বুলেটিনে সে তথ্য তুলে ধরতে বলা হয়েছে।
৮. অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ ও অতিরিক্ত মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৯. প্রতি করোনাকালীন সময়ে প্রতি ১৫ দিন পর পর উপরোক্ত নির্দেশনা মেনে হাইকোর্ট রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
১০. পাশাপাশি এসব মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩০ জুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে ১৩ জুন করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারি নির্দেশনার বাস্তবায়ন চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এছাড়াও রিটে সরকারি নির্দেশনা না মেনে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়।