নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতে কোথাও নেই যে খালেদা জিয়াকে আমরা আগের দরখাস্তের বিবেচনায় বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারব। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় কাউকে বিদেশ যেতে দেওয়া যাবে না, এটা আমি কখনো বলিনি। একবার নিষ্পত্তিকৃত কোনো দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার কোনো সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্র্যাব) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি। শর্তযুক্ত শর্তে খালেদা জিয়া সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন, সেটি যদি না মেনে পুনরায় জেলে যেতে চান, সেটাও হতে পারে। খালেদা জিয়া যদি বলেন- আপনারা আমাকে যে শর্তযুক্ত (শর্তে) ছেড়ে দিয়েছেন, এটা আমি মানি না। আমাকে জেলে নিয়ে যান, আমি আবার দরখাস্ত করব। তখন উনি আবার দরখাস্ত করতে পারেন।
সাংবাদিকদের পেশাদারত্ব নিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আপনাদের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে ফেলেছে। এখন কিন্তু সকলেই সাংবাদিক হয়ে গেছে। এই যে সবার সাংবাদিক হয়ে যাওয়া, আপনারা কিন্তু লেখাপড়া করে এই পেশায় এসেছেন। একজন সাংবাদিক হতে হলে তার যে মানসিকতা প্রয়োজন, তার যে কাজের প্রয়োজন, সে নিজেকে কীভাবে প্লেস করবে, এসব কিন্তু জেনে বুঝেই আপনারা এ পেশায় এসেছেন। কিন্তু অপেশাদারদের এসব চিন্তা-ভাবনা নেই।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আজকে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে যারা বিচারপতি আছেন, তারা অত্যন্ত যোগ্য। আপিল বিভাগে যারা আছেন, তারা প্রত্যেকেই হয়তো প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই যোগ্যতা অনুসারে তার বিবেচনায় যিনি প্রধান বিচারপতি হতে পারবেন, তাকে প্রধান বিচারপতি করবেন, তার সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটার ব্যাপারে আমি যেটুকু বুঝি সরকার এই চিন্তা ভাবনার মধ্যেই নেই। তো সেজন্য কোনটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, কোনটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি না, সেই প্রশ্নের উত্তরের প্রয়োজনও নেই।’ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আইন না থাকায়, রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে থাকেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দুইটা জিনিস মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাউকে জিজ্ঞাসা করতে হয় না। এটা তার সর্বময় ক্ষমতা। একটা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা, আরেকটা হচ্ছে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা।’ ফলে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে, সে বিষয়ে অবগত নন বলেও জানান আনিসুল হক। বলেন, ‘আমি হচ্ছি, সরকারের একজন মন্ত্রী। যে ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির সেটা কী আমি জানি? আমি জানি না। তো মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিশ্চয় তার সুবিবেচনায় তাকে যিনি যোগ্য মনে করবেন এবং সংবিধানের পরিধির মধ্যে তার যে ক্ষমতা সেটা ব্যবহার করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবার (রাজনৈতিক দলের) নাম দেয়ার ক্ষমতা আছে, সবার নাম দেয়ার অধিকার আছে। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় না ইলেকশন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো বিতর্ক করার কোনো অবকাশ আছে।’
এর আগে ২০১২ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে ধারা তৈরি করেছেন সেটি অব্যাহত রেখেছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ প্রক্রিয়ার নির্বাচন কমিশন গঠনে কোনো বিতর্কের অবকাশ দেখছেন না আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সান নিউজ/এমকেএইচ