নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রী ও গৃহকর্মীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্তের জন্য তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। এর আগে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত-রাতে ঘটনাগুলো ঘটে। তারা হলেন, রামপুরায় প্রবাসীর স্ত্রী রিনভী আক্তার (২৩), পল্টনে গৃহকর্মী সাদিয়া আক্তার (২৬) ও মুগদায় বিদ্যুৎ হোসেন (১৮)।
মৃত রিনভী আক্তারের স্বজন ও আশপাশের লোকজনের বরাত দিয়ে রামপুরায় থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মোঃ মমিনুর রহমান জানান, তালতলা বি ব্লকের বাসায় থেকে দরজা ভেঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রী রিনভী আক্তারের (২৩) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কেরামত আলী ও মাতা পলি বেগমের একমাত্র মেয়ে। আমেরিকা প্রবাসী মোঃ রাসেলের স্ত্রী। রিনভী আক্তারের চাচাতো মামা শহিদুল ইসলাম জানান, মায়ের সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অভিমানে নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে।
এসআই মোঃ মমিনুর রহমান আরও বলেন, রিনভী একটু জেদি প্রকৃতির ছিলেন, রামপুরা ওই বাসায় তার মা আর তিনি থাকতেন। তার বিয়ের কয়েক মাস পর রিনভীর স্বামী আমেরিকায় চলে যায়। সেই বাসায় আড়াই বছর যাবত থাকেন তারা। যতটুকু জানতে পেরেছি, মেয়েটির খাবার নিয়ে তার মা বকাঝকা করেছিল। তিনি (মা) দু’দিন যাবত খাননি, এসব নিয়েই মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।
এদিকে, মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রানতোষ বণিক বলেন, উত্তর মান্ডা খালপাড়ের ৩৫/১ নম্বর ভাড়া বাসার পাঁচতলা ভবনের ছাদের উপর পানির ট্যাংকির পাইপের সাথে লাইলনের রশিতে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে রাজমিস্ত্রী বিদুৎ হোসেনের (১৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত বিদুৎ হোসেনের চাচা আবুল কালাম জানিয়েছেন, ঢাকা নবাবগঞ্জের চাড়াখালী গ্রামের মৃত কামাল হোসেনের একমাত্র ছেলে বিদ্যুৎ। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তবে অতিরিক্ত নেশা করতেন। বেশ কিছুদিন আগে রিহ্যাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। কিন্তু গতকাল (শনিবার) রাতে সবার অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়েছে, পরে পুলিশকে সংবাদ দেয়া হয়েছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যুতের বাবা মারা যবার পর, তার মায়ের অন্যত্র বিবাহ হয়। সেই থেকে বিদুৎ মান্ডায় দাদা-দাদি ও ফুপুর সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি বিদ্যুৎ তবলীগ জামাতে যেতে চেয়েছিল, তবে তার ফুফু আনোয়ারা বেগম বলেছিল, নামাজ পড়িস না, কাজে যাস না তাবলীগ জামাতে গিয়ে কি করবি। এতে সে অভিমান করে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছি।
অপরদিকে, পল্টনে একই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২ পল্টন থানার শান্তিনগরের ১২৫, পীর সাহেবের গলির একটি বাসা থেকে সাদিয়া (১৬) নামের এক গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, গৃহকর্তা ও গৃহকর্তী ওই গৃহকর্মীকে বাসায় রেখে বাহিরে দাওয়াতে গিয়েছেন। ফিরে এসে দেখেন দরজা বন্ধ করে রেখেছে। কিন্তু ডাকাডাকি করার পরও কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। অন্যদিকে, আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় দরজা ভেঙ্গে দেখতে পাওয়া যায়, ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে গৃহকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সান নিউজ/মোস্তাফিজ/এমকেএইচ