নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সরকারের পরিকল্পনাধীন ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন করিডোর’ হাতি ও বাঘসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ জন্য ভারত হতে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাসালং, সাঙ্গু হয়ে মিয়ানমার পর্যন্ত এশীয় হাতি ও বেঙ্গল টাইগারের জন্য আন্তঃদেশীয় নির্বিঘ্ন চলাচলের পথ বা করিডোর তৈরির সম্ভাব্যতা নিরূপণ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বন অধিদপ্তর আয়োজিত “ফিজিবিলিটি স্টাডি অভ ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াইল্ডলাইফ করিডোর ইন চট্টগ্রাম, চিটাগাং হিলট্রাক্টস এন্ড কক্সবাজার উইথ মিয়ানমার এন্ড ইন্ডিয়া শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের ন্যাশনাল রেজাল্ট শেয়ারিং এন্ড কনসালটেশন ওয়ার্কশপ” এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, এটা করা সম্ভব হলে এই তিন দেশের হাতি ও বাঘের খণ্ডিত আবাসস্থলগুলোর ভিতর সংযোগ স্থাপিত হবে। যেটি এই প্রাণী দু’টির প্রজনন ও বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং একইসাথে এই অঞ্চলের অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা আরো এক ধাপ অগ্রসর হতে পারবো
বনমন্ত্রী আরও বলেন, বনভূমির অভ্যন্তরে বসতি স্থাপন, বনভূমিকে কৃষিজমিতে রূপান্তর ও বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বনভূমি সংকুচিত হচ্ছে। একই সাথে বন্যপ্রাণী হারাচ্ছে তাদের আবাসস্থল ও চারণভূমি। ফলশ্রুতিতে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর দ্বন্দ্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে করে মানুষ ও বন্যপ্রাণী উভয়ই প্রাণ হারাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (আইইউসিএন) এর ২০১৬ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে এশীয় হাতির সংখ্যা সর্বমোট প্রায় ২৬৮টি এবং ২০১৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে সর্বমোট বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা প্রায় ১১৪টি। দ্রুত সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অচিরেই এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিগুলি বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে। এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্দেশ্যেই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর এশীয় হাতি ও বেঙ্গল টাইগারের আন্ত:দেশীয় ও দেশের অভ্যন্তরীণ চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে চলতি বছর জুন মাসে এ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার কার্যক্রম গ্রহণ করে। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত টিকে থাকা বন্যপ্রাণীদের রক্ষার অঙ্গীকার ও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব(প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ। প্রজেক্টের সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য দেন আইইউসিএন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রকিবুল আমীন। কীনোট পেপার উপস্থাপন করেন করিডোর প্রজেক্টের ন্যাশনাল এক্সপার্ট এম মনিরুল এইচ খান।
সাননিউজ/জেআই