নিজস্ব প্রতিবেদক:
লাইফ সাপোর্টে থাকা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম আর নেই (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। শনিবার (১৩ জুন) তার ছেলে তানভীর শাকিল জয় জানিয়েছেন, ‘আব্বা আর নেই।’ এসময় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী আল ইমরান চৌধুরী মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ১১টা ১০ মিনিটে আমরা তার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছি।
এর আগে শুক্রবার (১২ জুন) রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড রাতে মিটিং করেছে। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় নতুন করে হার্টে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আগে এই সমস্যা ছিল না।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুন নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হলে ফলাফল পজিটিভ আসে। তবে সম্প্রতি মোহাম্মদ নাসিমের পরপর তিনটি করোনা টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ জুন শুক্রবার ভোরে তার স্ট্রোক হয়। সেদিনই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রাজিউল হকের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার হয়। এর আগেও তার একবার স্ট্রোক হয়েছিল। সব মিলিয়ে তার অবস্থা খুব সংকটাপন্ন বলেই মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা।
নাসিমের চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াকে প্রধান করে প্রথমে ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। গত সোমবার আবার সে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়।
মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি ২ এপ্রিল ১৯৪৮ সালে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। তিনি সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।