নিজস্ব প্রতিবেদক: কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, জ্বালানির একটা স্থিতিশীল মূল্য থাকা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি বাস্তবসম্মত নয়। এটি অত্যন্ত সেনসেটিভ বিষয়। এখান থেকে মুনাফা করা সরকারের উদ্দেশ্য না।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে 'ক্যাব প্রণীত ভোক্তার জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে বিআইআরসির ভূমিকা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের' ওপর নাগরিকদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গোলাম রহমান বলেন, ন্যায্য মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ করা ও অর্থনীতিকে বেগবান করার দায়িত্ব সরকারের। এজন্য সরকার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকিও দেয়। যখন জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল তখন আমরা একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রাইস স্টেবেলাইজেশন ফান্ড নামের একটা তহবিল গঠন করার। অতিরিক্ত মূল্যে যে জ্বালানি বিক্রি হবে সেই অর্থটা তহবিলে রাখা। যখন জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায় সেই তহবিল ব্যবহার করে তা স্থিতিশীল রাখা। যদি এমন হয় তহবিল দিয়ে হচ্ছে না, তখন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গণশুনানির মাধ্যমে জ্বালানির দাম পূর্ণ নির্ধারণ করতে পারে।
ঢাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এম এম আকাশ বলেন, বাংলাদেশের ক্ষমতা ভোক্তাদের হাতে নেই। ব্যবসায়ীদের কাছে চলে গেছে। সরকার বাজারে হস্তক্ষেপ করছে। তারা বেসরকারি খাতকে সুবিধা করে দিচ্ছে। একজন অর্থনীতিবিদ হিসাবে এটা আমরা দেখছি। বিআইআরসি যতদিন পর্যন্ত সরকারের বাইরে গিয়ে কাজ করতে না পারবে ততদিন তারা নাগরিক সুবিধা প্রদান করতে পারবে না। সেজন্য আইন পরিবর্তন করে বিআইআরসিকে ক্ষমতা দিতে হবে। যে ক্ষমতা দেওয়া আছে সেটাও যেন তারা ব্যবহার করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারে চেয়ে বেসরকারি খাত বেশি শক্তিশালী।
আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ২০০৩ সালের আইন অনুযায়ী আইআরসিকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা তারা ঠিক মত প্রয়োগ করতে পারছে কিনা ও প্রয়োগের মাধ্যমে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে কিনা তা উঠে এসেছে।
স্থপতি মোবাশ্বের হক বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকরিজীবীদের বলেছিলেন আপনারা জনগনের সেবক। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমরা দেখতে পাই জনগন তাদের সেবক নয় কৃতদাস। যাই চাই আমি তাই করবো। আমিই বিচার করবো, আমিই চুরি করবো, দুটি কাজ তো একসঙ্গে হতে পারেনা। সরকারি কর্মকর্তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হচ্ছেন। আমরা বিআইআরসিকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে চাই। এ জন্য জনসম্পৃক্ততার কোনো বিকল্প নাই।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস, এনার্জি প্যাকের পরিচালক হুমায়ন রশীদ, অটোগ্যাস স্টেশন মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সিরাজুল মওলা প্রমুখ।
সান নিউজ/এস