নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে পৃথক দুটি ধারায় ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যিনি সরকার বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন, তাকে তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকা উচিৎ। সবসময় ‘ট্রান্সপারেন্সি এবং অ্যাকাউন্টিবিলিটি মেইনটেইন করা উচিৎ’। এটা আজকের রায় থেকে শেখার বিষয়।
মন্ত্রী বলেন, আমি অবশ্যই বলবো, আজ বিচার বিভাগের জন্য সুখকর দিন নয়। কিন্তু এটাও ঠিক যে, অন্যায় করলে তার বিচার হবে। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় এটা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো।
মন্ত্রী বলেন, ‘আই অ্যাম নট ভেরি হ্যাপি।’ বিচার বিভাগের সাথে তিনি (এসকে সিনহা) সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন। আমি একজন আইনজীবীও। আমিও বিচার বিভাগের সাথে সারা জীবনই সম্পৃক্ত। সেজন্য আমার জন্য এটা সুখকর হতে পারে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত আমরা কী দেখেছি, এই দেশে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করলেও একটা মামলা হয়নি। এই সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেলহত্যা মামলা, মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং অন্যান্য যেসব দুর্নীতির বিচার হয়েছে তার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অন্যায় করলে আইন ও আদালত তার নিজস্ব গতিতে চলে। এক্ষেত্রে অন্যায়ের বিচার হবে এবং অন্যায় প্রতিরোধ হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম অন্যায় কোন প্রধান বিচারপতি করেননি। সেজন্য এরকম বিচার করার প্রয়োজন হয়নি। এরকম অন্যায় হলে নিশ্চয়ই বিচার হতো। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম নজির আছে বলেও জানান তিনি।
বিরোধী পক্ষ বলছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি যদি সরকারের মতের বাইরে না যেতেন, তাহলে হয়তো তাকে এ ধরনের সাজার মুখে পড়তে হতো না- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এ কথাটা সত্য নয়। তারা হয়তো সরকারকে ‘ক্রিটিসাইজ’ করার জন্য বলছেন। এ কথার কোন সারমর্ম নেই।
সান নিউজ/এনএএম