কূটনৈতিক প্রতিবেদক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে যেসব বিশ্বনেতার সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁরা সবাই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও কুশলতায় মুগ্ধ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে "ওয়ার্ল্ড লিডার্স অন বঙ্গবন্ধু এন্ড বাংলাদেশ" শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৭-২৬ মার্চ ২০২১ দশ দিনব্যাপী 'মুজিব চিরন্তন' অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্বনেতৃবৃন্দের ২৩২বক্তব্য ও বাণী সংকলন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শুধু বাংলাদেশের জনগণই ভালোবাসতেন– এমন নয়, বিশ্বমঞ্চেও তাঁর অনেক বন্ধু ও শুভাকাঙ্খী ছিলেন। তিনি সারা বিশ্বে অত্যন্ত কাঙ্খিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বইয়ে সংকলিত বিশ্বনেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও বাণীগুলোর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বনেতারা তাঁদের বক্তব্য ও বাণীতে বঙ্গবন্ধুর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের ১১ লক্ষাধিক নাগরিককে মানবিক আশ্রয় প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে যেকোনো সমস্যা সমাধানের মতো অর্জনগুলোর জন্য শেখ হাসিনার সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
ড. মোমেন আরও বলেন, এই গ্রন্থের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বনেতৃবৃন্দের মূল্যায়ন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম, এমপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তি কেন্দ্রীক এবং উন্নয়নমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও সফলতায় বিশ্বনেতাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ও স্বীকৃতি এই গ্রন্থে উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের বক্তব্য ও বাণীর এই সংকলন গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বইটির প্রথম অধ্যায়ে 'মুজিব চিরন্তন' অনুষ্ঠানে সশরীরে যোগদানকারী ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ও শ্রীলঙ্কা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসার প্রদত্ত ভাষণ, দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিশ্বনেতাদের নিকট থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট প্রেরিত মোট ১৬৯ বাণী, তৃতীয় অধ্যায়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক প্রেরিত ১৩ বাণী, চতুর্থ অধ্যায়ে ৩৫ ভিডিও মেসেজের ট্রান্সক্রিপ্ট এবং পঞ্চম অধ্যায়ে বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব কর্তৃক প্রেরিত ১০ বাণী রয়েছে। এসব ভাষণ ও বাণীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিশ্বনেতৃবৃন্দের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে। একইসাথে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জনসমূহেরও ভুয়সী প্রশংসা করেছেন।
অনুষ্ঠানে এ এস এম শামসুল আরেফিন সম্পাদিত "বাংলাদেশ এ্যাট ফিফটি" এবং সত্যম রায় চৌধুরী সম্পাদিত "বঙ্গবন্ধু ফর ইউ" বই দুটিরও মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সান নিউজ/এফএআর