কূটনৈতিক প্রতিবেদক: এবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের দিকে আঙুল তুললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাদের আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা ও ফিলিস্তিন সমস্যা ঝুলে আছে। আর চীন ও রাশিয়া সদয় হলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে।
রোববার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতিসংঘ দিবস-২০২১’ উপলক্ষে এক আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের এখানে এসেছে। জাতিসংঘের যা যা করার দরকার করছে। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একজন যদি আপত্তি করে জাতিসংঘ সেখানে কিছুই করতে পারে না। ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা ও ফিলিস্তিন সমস্যা ঝুলে যাচ্ছে। জাতিসংঘের নিজের কোনো শক্তি নেই। তার শক্তি হচ্ছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। সেই কারণে আমরা ঝুলে আছি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন। জাতিসংঘে কোনো বিষয়ে কোনো প্রস্তাব পাস করতে গেলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রকে একমত হতে হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, আগামীতে যারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে ঝুলিয়ে রেখেছে তারা আরও সদয় হবেন। বিশেষ করে রাশিয়া ও চীন। তারা সদয় হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে। আমরা আশাবাদী, আমাদের এ সমস্যা দূর হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গতি আনতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় যুক্ত হয় চীন। বাংলাদেশের আগ্রহে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় বসে চীন। বেশ কয়েকবার আনুষ্ঠানিক এবং অনুষ্ঠানিকভাবে চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলতে থাকে। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও চীনের পক্ষ থেকে ঢাকাকে বলা হচ্ছে, প্রত্যাবাসন শুরু করতে প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। বাংলাদেশও চীনের ওপর ভরসা করছে। অন্যদিকে রাশিয়া এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেই অর্থে বাংলাদেশের পাশে নেই।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা।
সান নিউজ/এফএআর