নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমারসহ (এস কে সিনহা) এগারোজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের মামলার রায় পেছালো। আগামী ২১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম অসুস্থ থাকায় রায়ের তারিখ পেছানো হয়।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের ( ৫ অক্টোবর) দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
এর আগে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছিলেন প্রধান বিচারপতি। তিন ধারায় আসামিদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা রয়েছে। আমরা আদালতের কাছে সমস্ত ডকুমেন্ট সাবমিট করেছি। আশা করি আসামিরা সর্বোচ্চ সাজা পাবেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম বলেন, মামলার প্রধান আসামি এসকে সিনহা শুরু থেকে পলাতক। মামলার সব আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, সেই ধারায় অভিযোগ প্রমাণ হয় না। মামলাটিতে চার কোটি টাকা ঋণের কথা বলা হয়েছে। এর অধিকাংশই পরিশোধ করা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে যাচাই-বাছাই করে ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ঘটনাকালীন বাবুল চিশতি ছিলেন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান। ব্যাংকার হিসেবে ছিলেন লুৎফুল হক। চিশতি সাহেবকে জড়িত করা হয়েছে প্রত্যক্ষ প্রভাবে। আশা করি রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এজন্য তারা খালাস পাবেন।
গত ২৯ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর একই আদালতে মামলাটির উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্য ৫ অক্টোবর ধার্য করলেও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম অসুস্থ থাকায় রায়ের তারিখ পেছানো হয় আবারো।
এর আগে মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। গত বছরের ১৩ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ। এর আগে ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন দেওয়া হয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে আছেন। এ ছাড়া ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা জামিনে আছেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন। এক আসামি মারা যাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে একজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ মামলার বাদী।
সান নিউজ/এফএইচপি