নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি ভবনগুলোতে বিদ্যুতের অপচয় সবচেয়ে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত অভ্যাস দিয়েই ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ার সম্ভব রয়েছে। এসির তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি রাখার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত আছে। এক্ষেত্রে আমরা মোটেই সচেতন নই। অনেক সময় ঘরে কেউ না থেকেও এসি, লাইট জ্বালিয়ে রাখি। এমনটা সরকারি ভবনেই বেশি দেখা যায়। আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। এসির ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত মানলে আর বের হওয়ার সময় সুইচ বন্ধ করলে এমনিতেই বিদ্যুৎ খরচ কমে যাবে।
এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ‘এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইন পাবলিক বিল্ডিংস’ শীর্ষক ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্রেডা ও জিআইজেড এর সহায়তায় ইপি টকসে মোল্লাহ আমজাদ হোসেন সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এবং সাসটেনেবল অ্যান্ড রিনিয়েবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট অথরিটির (স্রেডা) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল্লাহিল আজম। আলোচ্য বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেড্রার সদস্য (এনার্জি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন) ফারজানা মমতাজ।
প্যানেলিস্ট হিসেবে কথা বলেছেন, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. জহরুল হক এবং গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল হক।
ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী আরও বলেন, এনার্জি এফিশিয়েন্সি নিয়ে কারিগরি বিষয়ে সমাধান ধাপে ধাপে করতে হবে। যেমন ২০১০ সালে আমাদের উদ্যোগে সারাদেশে প্রায় দেড় কোটি সিএফএল বাল্ব বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছিল। আসলে সচেতনতা তৈরি করতেই এমন উদ্যোগ।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর উদাহরণ অনুসরণ করে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে নিজ হাতে এসি লাইটের সুইচ বন্ধ করতে হবে। সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ভবন তৈরিতে পূর্ণ সহায়তা করবে। বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। তারাও যেন এমন ভবন তৈরিতে এগিয়ে আসে। সেখানেও সরকারি সবরকমের সহযোগিতা থাকবে।
মূল প্রবন্ধে ফারজানা মমতাজ বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ভবন নিয়ে স্রেডা একটা নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ করেছে। সরকার ২০২১ সালে ১৫% আর ২০৩০ সালের মধ্যে ২০% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করেছে। শুধুমাত্র আবাসিক খাত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করা গেলে প্রায় ২৯% জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব।
মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ভবনগুলোকে জ্বালানি দক্ষ করা একটি বড় কাজ। প্রাথমিক পর্যায়ে পাবলিক বিল্ডিংকে জ্বালানি দক্ষ করার উদ্যোগ হিসেবে ১২টি ভবনে সমীক্ষা করা হয়েছে।
সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, আলোচ্য বিষয় আমার জন্য নতুন হলেও দেশের হাসপাতালগুলোকে জ্বালানি দক্ষ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করবো। এটার প্রথম উদ্যোগ হিসেবে সচিবের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ঢাকায় একটি পাবলিক হাসপাতালকে পাইলট হিসেবে জ্বালানি দক্ষ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
প্রফেসর ড. জহুরুল হক বলেন, কনভেনশনাল ফ্যানের পরিবর্তে বিএলডিসি ফ্যান ব্যবহারের সুপারিশ করা হচ্ছে।
ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল হক বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তর গ্রিন এনার্জি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। বর্তমানে সেকথা মাথায় রেখেই ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এনার্জি ব্যবহারে কার্বন নিঃসরণ যাতে কম হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সাননিউজ/এমআর