নিউজ ডেস্কঃ
দেশে যে করোনা নামক মহামারী চলছে, আর এটা থেকে বাঁচতে হলে যে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে তা যেন ভুলেই গেছে দেশের মানুষ। বিষয়টি দেশের জন্য দুশ্চিন্তার হলেও তার কোন বালাই নেই মানুষের মাঝে। অন্তত এমনটাই দেখা গেছে মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায়।
দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ব্যাংকগুলোর সামনে লেগে আছে ১০০ থেকে ১৫০ জনের লম্বা লাইন। লাইনে যেন যুবক-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, মানুষ গিজগিজ করছে পুরো মতিঝিল জুড়ে। নেই কোন সামাজিক দূরত্ব। কেউ এসেছে গাড়ির লাইসেন্স নবায়নের টাকা জমা দিতে, কেউ এসেছে টাকা তুলতে, কেউবা এসেছে টাকা পাঠাতে।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে ব্যাংকের ভিতরে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। কোন কোন ব্যাংকে দেখা গেছে সামাজিক দুরত্ব মানার জন্য ১ মিটার দূরে দূরে চিহ্ন দেওয়া আছে এবং কাস্টমারদেরকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ানোর জন্য। পাশাপাশি লাইন থেকে দু'জন করে ভেতরে ঢুকানো হচ্ছে।
টানা ৬৬ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকার পর, প্রথম দিনেই অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অফিস করেছেন। তবে পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছিল এখনও ঈদের আমেজ যায়নি। চায়ের দোকানে বসে অনেককেই কুশলাদি বিনিময় করতে শোনা যায়। অধিকাংশ ব্যাংকেই সামাজিক দূরত্ব মেনে কর্মকর্তাদের আসন বিন্যাসে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
একই অবস্থা খোদ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকেও। ফলে সামাজিক দূরত্ব, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়ে গেছে কাগজে-কলমে। তবে অল্প কিছু বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংক তা মেনেছে।
সোনালী ব্যাংক শাখায় গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশদ্বারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে ছয় সাত জন করে অপেক্ষা করছে কিন্তু সামাজিক দুরত্ব ছিল না তাদের মাঝে। এ ব্যাপারে শাখাটির ব্যবস্থাপক মো. মোদাচ্ছের হাসান বলেন, ‘অন্যান্য সময়ের তুলনায় আজ কম গ্রাহক এসেছেন। তবুও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। ব্যাংকে এলে সবাই সেবা নেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। কেউ অপেক্ষা করতে চান না। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় তেমন ভিড় ছিল না। কাউন্টারের সামনে দু-তিনজন গ্রাহক অপেক্ষা করছেন। শাখার কর্মকর্তারা কোনো দূরত্ব না মেনে আগের মতোই পাশাপাশি বসেছেন।
একই অবস্থা দেখা যায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা ও জনতা ব্যাংকের স্থানীয় শাখাতেও। এসব ব্যাংকেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। বেসরকারি খাতে ইসলামী ব্যাংকের জনবল সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৪ হাজার। তাই ব্যাংকটির শাখাগুলোর আসন বিন্যাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও কঠিন। ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া জানান, দূরত্ব বজায় রেখে কাজ চালাতে প্রধান কার্যালয়ে পালাক্রমে কাজ শুরু হয়েছে। শাখাগুলোতে আগের মতো সবাই কাজ করছেন। সবার জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এভাবেই নিরাপদ রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সান নিউজ/ বি.এম.