নিজস্ব প্রতিবেদক: বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে ‘গোলকিপার্স গ্লোবাল গোল চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পেয়েছেন বাংলাদেশি তরুণী ফাইরুজ ফাইজা বিথার। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
ফাইরুজ ফাইজা বিথার মনের স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছেন ফাইরুজ।
গোলকিপার্সের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১ চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত বাংলাদেশের ফাইরুজ ফাইজা বিথার পরিবর্তন আনার অনুপ্রেরণায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে এবং নেতৃত্বের জায়গায় থেকে সুস্বাস্থ্য ও মানুষের ভালো থাকার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার এ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ‘গোলকিপার্স গ্লোবাল গোল চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর অন্য দুটি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে কলম্বিয়ার জেনিফার কলপাস এবং লাইবেরিয়ার সাট্টা শেরিফকে। গ্লোবাল গোলসকে পূর্ণতা দিতে তারা প্রত্যেকে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এই সম্মান তাদের সেই কাজের স্বীকৃতি।
পুরস্কার প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় ফাইরুজ ফাইজা বিথার বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি এই অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের আরও তরুণ-তরুণী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হবে। এখানে আমাদের যে দূর্বলতা আছে তা দূর করে ফেলতে পারব ইনশাআল্লাহ।
আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির পর ফাইরুজ বলেন, আমি আগে থেকেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক ছিলাম। কারণ, আমার ১৩ বছর বয়সে আমার বাবা খুন হন। আমি অনেক ছোট ছিলাম, হয়তো ওইভাবে অনুভব করতে পারিনি, কিন্তু আমার মা, আমার পরিবারের সবাই কেমন অবস্থার মধ্যে গিয়েছেন। হঠাৎ একজন মানুষকে হারানোর যে শোকটা কাটিয়ে উঠতে অনেকের অনেকভাবে সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। ওই সময় আশেপাশের মানুষদের দেখে আমার মনে হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যটা খুবই জরুরি। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা ওই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সেজন্যই আমরা ৭জন মিলে মনের স্কুল শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রজন্মের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হতাশায় ভোগেন। এদের অধিকাংশই জানেন না, কেন তারা হতাশায় ভোগেন। এর চাইতেও ভয়াবহ ব্যাপার হলো, অনেকেই জানেন না কীভাবে তারা এই হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন। এদেরকে সাহায্য করতেই খোলা হয়েছে ‘মনের স্কুল’।
ফাইরুজ ফাইজা বিথার বলেন, আমাদের মাঝে অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে থাকেন, কিন্তু প্রকাশ করতে পারেন না। আবার নিজের হতাশা দূরীকরণে মানসিক ডাক্তারের কাছে যাওয়াকে পাগলের ডাক্তারি বলে মনে করেন। আমরা এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দিতে চাই।
সান নিউজ/এমকেএইচ