নিজস্ব প্রতিবেদক: নদীতে বর্জ্য ফেললে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল আইন, ২০২১ এর খসড়া করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে খসড়া আইনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইনল্যান্ড শিপিং অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬ (অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬)’-কে যুগোপযোগী করে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল আইনের খসড়া করা হয়েছে। এ আইনে অনেক নতুন নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। বিধান লঙ্ঘনের শাস্তিও বাড়ছে। একই সঙ্গে নৌ-চলাচল সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাগুলোর কাজের আওতা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল আইনের খসড়া আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছি। ওখানে একটি কমিটি আছে, সেই কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। আইনটি প্রণয়নে আপাতত আমাদের পর্যায়ের কাজ শেষ। ওই কমিটি দেখবে, তাদের যদি কোনো অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) থাকে তা জানাবে, আমরা সে অনুযায়ী পরিমার্জন করবো খসড়াটি। এরপর খসড়াটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
সাজা হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা রেখেই খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, এখন আরও অনেক ধাপ অতিক্রম করবে, সেখানে শাস্তির বিষয়গুলো তারা দেখবেন, কোনো বিচ্যুতি থাকলে সেগুলো দেখে তারা এটি চূড়ান্ত করবেন।
তিনি বলেন, আগের অধ্যাদেশটি ভারাক্রান্ত ছিল, যেগুলো আইনের মধ্যে না রেখে বিধিমালায় নেয়া দরকার। আগে আইনটি ইউজার-ফ্রেন্ডলি ছিল না। আইনের কিছু কিছু জিনিস আমরা বিধিমালায় নিয়ে যাবো।
কিছু বিষয় ছিল, বিআইডব্লিউটিএসহ অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার কাজের নির্দিষ্ট সীমারেখা ছিল না। কিছু অস্বচ্ছতা ছিল, ডুপ্লিকেশন বা ওভারল্যাপিং ছিল। নতুন আইনে সেগুলো দূর করে সবার কাজগুলো ওয়েল ডিফাইন থাকবে।
শুধু শাস্তির বিধান করলেই হবে না। পাশাপাশি নৌযানের বর্জ্য যেন নির্ধারিত স্থান থেকে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। নৌযানের বর্জ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে তার ডিসপোজ করারও ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর প্রয়োজন হবে, সেটা সরকারকে করতে হবে
সচিব আরও বলেন, আগে বিধিমালা ছিল না। আইনটি চূড়ান্ত হলে আমরা আইনের অধীনে বিধিমালার কাজে হাত দেবো।
নতুন আইনে নদীতে বর্জ্য নিক্ষেপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ নৌ-সীমানায় কোনো নৌযান থেকে বা তীরসংলগ্ন কোনো স্থাপনা বা ভাসমান স্থাপনা থেকে তেল অথবা তৈলাক্ত পদার্থ, অপরিশোধিত পয়ঃমল, দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও কিচেন গার্বেজ, যে কোনো ধরনের প্লাস্টিক ব্যাগ বা বস্তু, যে কোনো ধরনের টক্সিক পদার্থ, জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর যে কোনো বস্তু, পানির স্বাভাবিক গুণাগুণ ও রং নষ্টকারী কোনো পদার্থ নদীতে নির্গত বা নিক্ষেপ করা যাবে না।
এ বিধান লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে। জানমাল রক্ষার প্রয়োজনে ও নৌযান উদ্ধারের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
সান নিউজ/এনকে