নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, প্রবাসীদের সুবিধার জন্য বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষা দ্রুততম সময়ে করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে একদল প্রবাসীর অনশন কর্মসূচি পালনের মধ্যে দুপুরে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান আহমদ বলেন, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার কাজ কারা করবে, সে সিদ্ধান্ত আজকেই দেওয়া হবে।
সাতটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার কাজ এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠান পেতে পারে। এটা ঠিক করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করবে।
করোনায় দীর্ঘ বিরতির পর কয়েক মাস ধরে কাজের জন্য বিভিন্ন দেশে ফিরতে শুরু করেছেন প্রবাসীরা। অনেক দেশ বিমানবন্দরে করোনার আরটি–পিসিআর পরীক্ষা করে সেই সনদ নিয়ে যাওয়ার শর্ত দিয়েছে। সে কারণে দীর্ঘদিন ধরেই দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন প্রবাসীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা শনাক্তে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি দুই বিমানবন্দর হলো চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
এখনো সেই পরীক্ষার বন্দোবস্ত করতে না পারার কারণ ব্যাখ্যায় মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সব দিক বিবেচনা করেই কাজটা আগানো হচ্ছে। এটি করতে গিয়েই বিলম্ব হয়েছে। আরটি–পিসিআর পরীক্ষা করতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাগে, আর দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাগবে ইমিগ্রেশনে। প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্ত্রীর এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবিতে অনশন বসেন একদল প্রবাসী। বেলা ১১টার দিকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিচে অবস্থান নেন শতাধিক প্রবাসী। তাঁরা দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অনশনে অংশ নেওয়া প্রবাসীরা বলেন, মন্ত্রিসভার নির্দেশের পর সপ্তাহ পেরোলেও বিমানবন্দরে পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ শুরু হয়নি। এ কারণে অনেক প্রবাসী কর্মস্থলে ফিরতে না পেরে বিপদে পড়েছেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মিরপুরের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন জানান, ১০ বছর ধরে তিনি দুবাইয়ে কাজ করছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান বারবার তাঁকে কাজে যোগ দিতে বলছে। কিন্তু দেশের কোনো বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার না থাকায় তিনি যেতে পারছেন না।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমার জরুরি ভিত্তিতে দুবাইয়ে গিয়ে কাজে যোগ দিতে হবে। এ জন্য সেখানকার সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, আমার যাত্রা শুরুর ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই।
বিকেল চারটার দিকে প্রবাসীরা তাঁদের কর্মসূচি শেষ করে মন্ত্রণালয়ের নিচ থেকে চলে যান।
সান নিউজ/এফএআর