নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার খরচ মেটাতে আইন অনুযায়ী একটি তহবিল করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রুল জারি করে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা ব্যয় বহনের বিধান থাকা ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৫৩ ও ৫৪ ধারার বাস্তবায়ন করে অবিলম্বে একটি ‘আর্থিক সহায়তা তহবিল’ এবং তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ‘ট্রাস্টি বোর্ড’ গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, আইন সচিব,অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী মনোজ পরে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। আহতের সংখ্যা আরও বেশি। সড়ক পরিবহন আইনটি তিন বছর আগে পাস হলেও ৫৩ ও ৫৪ ধারার বাস্তবায়ন এখনও হয়নি। এক্ষত্রে সরকারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগও দেখা যচ্ছে না। আইনের বিধান বাস্তবায়নে সরকারের এই যে নিষ্ক্রীয়তা বা উদাসীনতা, এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ আইনজীবী বলেন, আইনটির সংশ্লিষ্ট ধারার বাস্তবায়ন হলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা খরচ বহনের জন্য একটি আর্থিক তহবিল গঠন করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৫৩ ও ৫৪ ধারার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে গত ১৭ আগস্ট বিবাদীদের উকিল নোটিস পঠান মনোজ কুমার ভৌমিকসহ সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী।
কিন্তু তিন দিনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তাদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে রোববার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তারা রিট আবেদনটি করেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছর দেশে ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় ৬ হাজার ৬৮৬ জন।
তাদের মধ্যে চালকের সংখ্যা ২ হাজার ৩৯ জন, ১ হাজার ৫৯৪ জন পথচারী, ৭৫৭ জন পরিবহনশ্রমিক, ৭০৬ জন ছাত্রছাত্রী, ১০৪ জন শিক্ষক, ২০০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৯১৮ জন নারী, ৫৪১ জন শিশু, ২৯ জন সাংবাদিক, ২৭ জন চিকিৎসক, ৮ জন আইনজীবী ও ৫ জন প্রকৌশলী। এ ছাড়া নিহতের মধ্যে ১৪৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীও রয়েছেন।
যনবাহনের বেপরোয়া গতিকে সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।
সান নিউজ/এফএআর