নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুই গুণ, পাঁচ গুণ, ছয় গুণ, কোন কোন ক্ষেত্রে ১০ গুণ পর্যন্ত বেশী এসেছে বিদ্যুৎ বিল! শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, করোনার অজুহাতে এমন উদ্ভট বিলের কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের হাতে। বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর অঘোষিত লকডাউনের পর থেকে গত দুইমাস কোন মিটার রিডার কারো বাসায় গিয়ে মিটার পর্যবেক্ষণ করেননি। এ কারণে মার্চ মাসে কাউকে কোন বিলও পাঠানো হয়নি।
সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনরকম জরিমানা ছাড়াই বিদ্যুৎসহ সব পরিষেবার বিল পরিশোধ করা যাবে।
মে মাসের মাঝামাঝি অনেকটা হঠাৎ করেই মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল একত্রে গ্রাহকদের পাঠানো হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মিটার রিডাররা এই বিল কোনো বাসায় না গিয়ে অনুমানের ভিত্তিতে তৈরি করেন।
কিন্তু সে অনুমানের বিল এতটাই অবাস্তব হয়েছে যে জনগণের রোষানলে পড়ছে সরবারহকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
একজন গ্রাহক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “ঢাকা শহরে একুশ বছর ধরে বাসা ভাড়া করে থাকছি-- এত টাকার ইলেক্ট্রিসিটি বিল চোখে দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি। দু'মাসের জন্য ১১,১২০ টাকা-- গড়ে প্রতি মাসে পৌনে ছয় হাজার টাকা। কীভাবে সম্ভব!”
তিনি আরো লিখেন, “প্রতি গরমে আমার এ বাসায় মাসপ্রতি বিল সর্বোচ্চ একবার হয়েছিল ১,৯০০ টাকা, যেটিও ছিল অস্বাভাবিক। সাধারণত ১,৪০০ থেকে ১,৬০০ টাকা দিয়ে এসেছি। শীতের দিনে হাজার থেকে ১,২০০ টাকা। জানি না এবার কী হয়েছে। হয়তো বিদ্যুৎ বিভাগ বলবে, আমরা বিদ্যুৎ খেয়েছি বসে বসে!''
শুধু ঢাকাতেই যে এই চিত্র, তা নয়। ঢাকার বাইরে বেশ অনেক স্থানে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বিল পাওয়ার অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা।
বরগুনা, শরিয়তপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এরকম ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই জানিয়েছেন প্রতি মাসে গড়ে তাদের ১,০০০-১,২০০ টাকা বিল আসে। কিন্তু গত দুইমাসের বিল এসেছে ৪,০০০ টাকা।
তবে ডিপিডিসি, ডেসকো বা পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা বলছেন, যারা অস্বাভাবিক বিল পেয়েছেন, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন দরকার নেই। নিকটস্থ দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাদের এসব বিল ঠিক করে দেয়া হবে। পাশাপাশি জুন মাসে মিটারের রিডিং দেখে বিল করা হলে সেখানেও সমন্বয় করা হবে।
সান নিউজ/ বি.এম.