নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর সোমবার (২৫ মে) সারা দেশে উদ্যাপন হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।
বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের বহু দেশে উদ্যাপন হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ ছাড়া সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে ও ইউরোপ, আমেরিকার অনেক দেশেই রবিবার (২৪ মে) ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়েছে।
অবশ্য বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বের মতো এবার দেশেও ঈদ অনেকটাই ভিন্নভাবে উদ্যাপন করা হচ্ছে।
জাতীয় ঈদগাহে এবার ঈদের জামাত হয়নি। সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।
করোনার কারণে এ বছর সম্পূর্ণ ভিন্ন আবহে কিশোরগঞ্জে ঈদ উল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রায় দুইশ বছরের প্রাচীন দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে এ বছর জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়ার সেই রেওয়াজও পালিত হচ্ছে না এবার। নতুন জামাকাপড় কেনেননি অনেকেই।
ঈদের মেলাও নেই কোথাও। প্রতিবছর শাড়ি মেলা, পাঞ্জাবি মেলাসহ বিভিন্ন প্রকার মেলা বসে ঈদ ঘিরে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেকেই যায় বিনোদনকেন্দ্রে। এবার সেটাও বন্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরতে অনেকে ছুটে যায় পর্যটনকেন্দ্রে। কিন্তু এবার দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও বন্ধ রয়েছে। সেখানে যাওয়ারও উপায় নেই।
টানা প্রায় দুই মাস অফিস-আদালত, কলকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। ঘরে খাবার নেই। এই অবস্থায় ঈদ তাদের জন্য বিষাদ হয়ে এসেছে। যদিও ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের ধনী ব্যক্তি, বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে কয়েকটি জেলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে। সে কারণে ঈদ তাদের জন্য খুশির বার্তা বয়ে আনতে পারেনি। করোনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির কষ্টের মধ্যেই এবার তাদের কাটবে এক অন্য রকম ঈদ।
ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঈদ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে ঘরে থেকে ঈদ উদ্যাপনের আহ্বান জানান।