নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া ও এরশাদ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধা এবং রাজনৈতিক দল করার সুযোগ দিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় অবশেষে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে।
রোববার (২৯ আগস্ট) গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: আইনি পর্যালোচনা’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি ভার্চ্যুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ এই সভা আয়োজন করে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার অর্থ বাংলাদেশকে হত্যা করা। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিনষ্ট করা। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো পরিচালনা করতে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই জিয়াউর রহমান ক্ষমতা লাভের পর খুনিদের যাতে বিচারের মুখোমুখি হতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করে।
আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. রাজিউর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাদেকুল আরেফিন। তিনিও ভার্চ্যুয়ালি ওই সভায় অংশ নেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার, চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ গণহত্যার বিচারের ব্যবস্থা করেছেন এবং অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। এখন তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখা। এ জন্য তরুণদের বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি, তাই আপনাদের শিক্ষিত হতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা। তাই যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে, তাদের সঙ্গে কখনোই আপস করা যাবে না এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রয়েছি, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, তাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যদিও দুঃখজনক বিষয় হলো—যাঁরা এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী, তাদের আমরা এখনো বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও এসব কুশীলবদের খুঁজে বের করার যে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটি প্রশংসনীয় এবং আমরা আশা করি, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ওই আলোচনা সভায় আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। এতে জুম অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সান নিউজ/এফএআর