নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থিত তনুগঞ্জ লেনের কুলুটৌলায় হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৭ অগাস্ট) হতে ভবনটির দরজা-জানলা ভাঙার মাধ্যমে ছয়তলা ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামীকাল হতে ভবনটির মূল অবকাঠামো ভাঙার কার্যক্রম শুরু হবে।
এ মাসের ১৯ আগস্ট তারিখে হাজী বাড়ী নামক ছয়তলা ভবনটি হেলে পড়লে সেদিনই রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, দক্ষিণ সিটির ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির সভাপতি ও করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান ও সদস্য সচিব খায়রুল বাকের, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, ঢাদসিক'র ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ও অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম জয়, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ইমন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসি'র শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় থানার কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সহায়তায় ভবনের বাসিন্দাদেরকে নিরাপদে বের করে আনা হয়। তিতাস গ্যাস লি. ভবনটির গ্যাস সংযোগ এবং ডিপিডিসি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। পরবর্তীতে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবর্গ, ঢাদসিক'র ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি ও আঞ্চলিক কমিটির সদস্যগণ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে একমত পোষণ করেন এবং ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেখানে স্টিকার সাটিয়ে দেয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ভবনটি সিলগালা করে দেয়।
ঘটনা পরবর্তী রাজউক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ অগাস্ট ভবনটি অপসারণে রাজউক হতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বরাবরে পত্র দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ অপসারণ বা ঝুঁকিমুক্ত করার বিষয়ে গঠিত ঢাদসিক'র কারিগরি কমিটির ২৫ অগাস্টের সভার কার্যবিবরণী এবং রাজউকের ২২ অগাস্টের পত্র মারফত অনুরোধের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গত ২৫ অগাস্ট ঢাদসিক'র কারিগরি কমিটির কার্যবিবরণীতে সাক্ষর করেন। সেদিনই দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার সাক্ষরে ভবনটি 'নিজ উদ্যোগে, নিজ খরচে ও নিজ ব্যবস্থাপনায় জননিরাপত্তা নিশ্চিতপূর্বক ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে' ভবন মালিককে পত্র দেওয়া হয়। তৎপ্রেক্ষিতে গত ২৬ অগাস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভবনটির সিলগালা খুলে দেয় এবং সেখানে রক্ষিত ভবনের বাসিন্দাদের আসবাপত্রসমূহ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আজ সকাল হতে ভবনটি ভেঙে ফেলা প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। আগামীকাল হতে ভবনের মূল অবকাঠামো ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরু হবে। আগামীকাল দুপুর ১১.৩০টায় দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন।
হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙ্গা প্রসঙ্গে দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, "বাড়ির মালিক নিজ উদ্যোগে ভবনটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছেন। আজ ভবনের দরজা-জানলা অপসারণসহ প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামীকাল ভবনের মূল অবকাঠামো ভাঙ্গা শুরু হবে।"
এ প্রসঙ্গে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান ইমন বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণে বাড়ির মালিক কাজ করছেন। আমরা তাঁর পাশে থাকব এবং সার্বিক সহযোগিতা করব, ইনশাল্লাহ।"
সাননিউজ/ জেআই