নিজস্ব প্রতিবেদক: সেতু বিভাগ জানিয়েছে, ফেরির ধাক্কা লেগে পদ্মা সেতুর পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার যে ছবি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ভুয়া। সেতু বিভাগের ধারণা, ওই ছবিটি অপপ্রচারের অংশ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি আমাদের নজরে এসেছে। ছবিটি যারা ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে শনিবার (১৪ আগস্ট) লৌহজং থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সূত্র বলছে, পদ্মা সেতুতে ১ মাসে চারবার ফেরির ধাক্কা লেগেছে। কিন্তু সেতুর কোন ধরনের ক্ষতি হয়নি। কেবল পিলারের পাইল ক্যাপে অল্প পলেস্তারা উঠেছে। যা মেরামত করা হলে সামান্য টাকা খরচ হবে। কিন্তু ছড়িয়ে পড়া ছবিতে পদ্মা সেতুর পিলারের বড় ক্ষতি দেখানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুর পিলারে ধাক্কার ঘটনার পেছনে ফেরির চালক-সুকানি এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অসতর্কতা ও নদীর তীব্র স্রোত কাজ করেছে। এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ না করে পরিচালনায় কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্রোত বেশি হলে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।
পদ্মার ফেরিঘাট স্থানান্তরের চিন্তা
পদ্মা সেতু এড়িয়ে ফেরি চলাচলের জন্য ঘাট স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন পেলে ঘাট স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পিলারে সম্প্রতি চার দফা ফেরি ধাক্কা দেয়ার পর এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শুক্রবার (১৩ আগস্ট) মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট এবং শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাট পরিদর্শন শেষে এই কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হলে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের বাঁধ রক্ষায় শরীয়তপুরের জাজিরায় মাঝির ঘাটে ফেরিঘাট স্থানান্তরের বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘাট স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত লাগবে। পদ্মা সেতুতে বারবার ফেরির ধাক্কা লাগার বিষয়টি নিয়ে আজ রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার একটি বৈঠকও রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘাট স্থানান্তরের দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)। তারা ঘাট করে দেয়, আর আমরা ফেরি চালাই।’
এর আগে ২৩ জুলাই সকালে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে রো রো ফেরি শাহজালালের। এতে ফেরির ২০ যাত্রী আহত হন। ওই দিনই এই ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক আশিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে পদ্মা সেতু রক্ষায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি সার্ভিসের রুটটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে। এজন্য বাংলাবাজার ঘাটটি স্থানান্তর করে মাঝিরকান্দি নিয়ে আসা, অথবা শিমুলিয়া ঘাটটি স্থানান্তর করে পুরনো মাওয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করে কমিটি।
সাননিউজ/এমএইচ/এমআর