নিজস্ব প্রতিবেদক : ভেজাল, অবৈধ, নকল এবং ভুয়া ব্র্যান্ডের চা বিক্রি রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনার জন্য মোবাইল কোর্টের তফসিলভুক্ত হচ্ছে ‘চা আইন-২০১৬’। এ বিষয়ে নির্দেশনা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছিল না।
অবশেষে চা বোর্ডের উদ্যোগে শিগগিরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেজেটভুক্ত হতে যাচ্ছে আইনটি। গেজেটভুক্ত হলেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা চা আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারবেন।
চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আইনটি মোবাইল কোর্টে গেজেটভুক্ত করতে বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত একটি সুপারিশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হচ্ছে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই শেষে পত্রটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সবশেষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনটি মোবাইল কোর্টের গেজেটভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চা আইন অনুযায়ী খুচরা-পাইকারি চা বিক্রেতা, ওয়্যার হাউজ এবং ব্লেন্ডার সবাইকে লাইসেন্স গ্রহণ করে ব্যবসা পরিচালনা করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেকে তা করেন না। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার সম্প্রতি নকল, ভেজাল এবং ভুয়া ব্র্যান্ডের চা বিক্রির প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও চোরাই পথে এনে একদল অসাধু ব্যবসায়ী খেয়াল খুশি মতো বিভিন্ন ব্রান্ডে চা বিক্রি করছে। এতে মূলধারার বৈধ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
২০১৬ সালের ১ আগস্ট প্রকাশিত হওয়া গেজেটে চা আইনের আইনের ৩২ ধারায় উল্লেখ রয়েছে- চা আইনের অধীনে অপরাধসমূহ, যে ক্ষেত্রে যতটুকু প্রযোজ্য, মোবাইল কোর্ট আইনে তফসিলভুক্ত করে বিচার করা যাবে।
আইনটি গেজেটভুক্ত হলে বোর্ডের কোনো কর্মকর্তাকে কর্তব্য সম্পাদনে বাধা প্রদান করা হলে বা উক্ত কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র প্রদর্শন না করা হলে ওই অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব দুই বছর কিন্তু অন্যূন ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা কিন্তু অন্যূন দুই হাজার টাকা এবং বাগানের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা কিন্তু অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডিত হবেন।
জানতে চাইলে চা বোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকাকালীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাকালে বেশ কয়েকবার ভেজাল চা ধরেছিলাম। কিন্তু চা আইনটি মোবাইল কোর্টের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই আমি চা বোর্ডে যোগ দেয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করি। বুধবার (১১ আগস্ট) চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে।’
সাননিউজ/এমএইচ