নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে কয়েকটি ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যানের জড়িত থাকার অভিযোগ গণমাধ্যমে আসার পর তা তদন্ত করছে সিআইডি। রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পরীমনির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে গণমাধ্যমে অনেক ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যানের নাম এসেছে। কিন্তু তারা আদৌ জড়িত কি-না, তা পুঙ্খানুঙ্খুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরীমনিকাণ্ডে অনেক মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা আমরা জানতে পারছি। অনেকের নামও পাচ্ছি। ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যান নাম অনেক গণমাধ্যমে আসছে। কিন্তু এ নামগুলো আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। যাদের সংশ্লিষ্টতা নেই, তারা যেন হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আপাতত ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যানদের নাম বলতে চাচ্ছি না। তদন্ত শেষে বলা যাবে।’
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘আমরা গতকাল এক সঙ্গে ছয়জন মূল আসামির বাসায় তল্লাশি করেছি। কিছু আলামত ও ডিভাইস উদ্ধার করেছি। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, পাসপোর্ট, মোবাইল, হার্ডডিস্ক এবং ফেরারি গাড়ি জব্দ করেছি। তদন্তের অংশ হিসেবে এই তল্লাশি অভিযান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরীমনি, পিয়াসা, মৌ, রাজসহ প্রত্যেককে জব্দ করা আলামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্তের এ পর্যায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে এই মুহূর্তে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের প্রতারণা, অনৈতিক কার্যক্রম ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মতো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নানা পেশার অনেক মানুষের নাম আমরা জেনেছি। তবে তা আমরা যাচাই বাছাই করছি। যাদের নাম এসেছে তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
সিআইডির হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে থাকা ছয় আসামির বিরুদ্ধেই মাদক রাখা ও পার্টির নামে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ভিকটিম পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো ভিকটিম অভিযোগ করেনি বা যোগাযোগ করেনি। তবে আমরা বেশ কিছু ভিকটিমের নাম জেনেছি। আমরা পরীমনি ও পিয়াসাদের দ্বারা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সত্যতা পেয়েছি। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। যদিও তারা নিজেরা এখনও তা স্বীকার করেনি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক বলেন, ‘সত্যিকারের ভিকটিমদের আমরা খুঁজছি। তাদের বক্তব্য আমরা শুনব। তা যাচাই-বাছাই করব। পুরোপুরি সত্যতার ভিত্তিতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
পরীমনির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সম্পর্কটা কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যতগুলো মামলা আসছে তার বেশিরভাগই মাদক সংক্রান্ত মামলা। তবে যদি অন্য কোনো বিষয় থেকে থাকে তাহলে আমরা তদন্তের মধ্যে নিয়ে আসব।’
তল্লাশি করে পরীমনির বাসায় কি কি পাওয়া গেল তা জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, অনেক কিছুই জব্দ করেছি। তা ফরেনসিক করা হচ্ছে। পরীমনিসহ ছয় আসামির ব্ল্যাকমেইল ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় দেবে না সিআইডি। তদন্তের স্বার্থে পরীমনিসহ আমাদের হেফাজতে থাকা প্রত্যেক আসামিকে প্রয়োজনে ফের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সাননিউজ/এমএইচ