কূটনৈতিক প্রতিবেদক: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেয়ার কোন সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেনি বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু এই মুসলমান জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তায় কাজ করছে সংস্থাটি। আর শরণার্থীদের রূপরেখার যে পর্যালোচনা, সেটি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রচারিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সোমবার (২ আগস্ট) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গারা শরণার্থী নয়। সে কারণে শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে রূপরেখা দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য নয়, ১৬টি দেশের জন্য প্রযোজ্য। যেসব দেশে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, সেখানে যাতে আত্মীকরণ করা যায়, যাতে শরণার্থী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি কমে, শরণার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ দেয়া যায়, সে জন্য বিশ্বব্যাংক এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
বিশ্বব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর রোহিঙ্গা ঢলের প্রভাব কমাতেও বিশ্বব্যাংক সহায়তা করছে।
শরণার্থী নীতিমালার পর্যালোচনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলছে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্য, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী, পানি ও পয়োনিষ্কাশন, জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর সড়কসহ মৌলিক অবকাঠামো, সৌরবাতি ও দুর্যোগ প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে ৫৯০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কক্সবাজারের উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকার কী, সেটা বুঝতে সহায়তা করছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে ৫৯০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে। যার পুরোটাই অনুদান, ঋণ নয়।
শরণার্থী ও তাদের আশ্রিত দেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কার্যকারিতা ও প্রভাব মূল্যায়নের লক্ষ্যে শরণার্থী নীতিমালার পর্যালোচনা করা হয় বলে বিশ্বব্যাংক তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে। এই মুহূর্তে শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে, এমন ১৪টি দেশের প্রতিটির জন্য এ পর্যালোচনা করা হয়েছে।
শরণার্থী-সংক্রান্ত রূপরেখার পর্যালোচনা কীভাবে সম্পন্ন হয়, এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক তাদের বিবৃতিতে বলেছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) আরপিআরএফ অনুসরণ করে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বিদ্যমান নীতিমালা, এর প্রয়োগ ও কর্মসূচির ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশের সমাজে অন্তর্ভুক্ত করতে বেশ কিছু প্রস্তাবসংবলিত ‘রিফিউজি পলিসি রিফর্ম ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে ১৬টি দেশের শরণার্থী ব্যবস্থাপনা নীতি সংস্কারের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা দপ্তর থেকে বাংলাদেশকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ওই রূপরেখার বিষয়ে মতামত দিতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। পরে এই সময় বাড়িয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সান নিউজ/এফএআর