নিজস্ব প্রতিবেদক: লকডাউনে শিল্প-কারখানা খুলে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন দূরের শ্রমিকরা। এ জন্য আগামীকাল রোববার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন ও লঞ্চ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
শনিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
গার্মেন্টসহ কলকারখানা শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে রোববার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সব ধরনের গণপরিবহন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কথা নিশ্চিত করে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, শ্রমিকদের স্বার্থে সরকার গণপরিবহন চলাচল শিথিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব জেলায় এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করবে। শনিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক।
এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের কাজে না ফিরতে অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। শ্রমিকদের অভয় দিয়ে সংগঠনটি বলছে, বিধিনিষেধ পুরোপুরি শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যোগ না দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
শনিবার (৩১ জুলাই) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান কারখানা মালিকদের উদ্দেশে বলেন, বিধিনিষেধ পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত গ্রামে অবস্থানরত কোনো শ্রমিক-কর্মচারী কারখানায় কাজে যোগদান করতে না পারলে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। কারখানার আশপাশে অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সদস্যদের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকার রোববার (১ আগস্ট) থেকে সব রপ্তানিমুখী শিল্প ও কলকারখানা বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখতে শুক্রবার (৩০ জুলাই) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ফারুক হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের কাছে আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। করোনার এই ক্রান্তিকালে রফতানিমুখী শিল্পের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এবং দেশ ও অর্থনীতি এবং জীবন ও জীবিকা দুটোই সমন্বয়ের স্বার্থে সব রফতানিমুখী শিল্প ও কলকারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার ঘোষিত এবং বিজিএমইএ’র দেয়া সব নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সদস্যদের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক শিল্পে কর্মরত সম্মুখসারির যোদ্ধাদের জন্য করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য সরকারের প্রতি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা আবারও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। রফতানি বাণিজ্যে গতি ধরে রাখতে শ্রমিকদের শতভাগ টিকার আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি। শ্রমিকদের নিরাপত্তায় করোনার টিকার ব্যাপারে সহায়তা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে আমরা আহ্বান জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ১ আগস্ট (রোববার) থেকে গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১ আগস্ট (রোববার) সকাল ৬টা থেকে রফতানিমুখী সব শিল্প-কারখানা বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত রাখা হলো।
সান নিউজ/এফএআর