জাতীয়
সিনহা হত্যার এক বছর

সুষ্ঠু বিচার নিয়ে শঙ্কা বাদীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যা করা হয়। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে তিনি নিহত হন।

শনিবার (৩১ জুলাই) সিনহা হত্যার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে সুস্ঠু বিচার প্রাপ্তি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হত্যা মামলার বাদী ও নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।

এর আগে হত্যার পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ নয় জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন ৬ আগস্ট কক্সবাজারের টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত আলোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় ও মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব-১৫।হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলেন-বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পূর্ব নির্ধারিত দিনে হচ্ছে না। মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এজন্য চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামিদের উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করে ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই একটানা তিনদিন বাদীসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে না। পরবর্তী দিন ধার্য করে এটি সম্পন্ন করা হবে।

মামলার বাদি ও মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেন, ‘ওসি প্রদীপ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দিলেও সে যে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত তা চার্জশিটেই প্রমাণিত হয়েছে। এখন আদালতে সাক্ষীরাই এ ঘটনা প্রমাণ করবেন। কিন্তু এতো সাক্ষীর হাজির করে সাক্ষ্য নেয়া সবচেয়ে কঠিন। তাছাড়া সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া যদি আরও পিছিয়ে যায় তাহলে সব সাক্ষীকে নাও পাওয়া যেতে পারে। তবুও আমাদের প্রত্যাশা সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে এবং এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মতো বিচার পাব।’

তিনি বলেন, এক বছর তো হয়ে গেলো। সবকিছু ভালোভাবে এগোচ্ছিল। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত সংস্থা চার্জশিট দিলো। কিন্তু চলমান কোভিড পরিস্থিতির কারণে মামলা গতি আগের মতো নেই এটা বলা যায়। তবুও চার্জশিট প্রদান এবং আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জফ্রেম হওয়াতে আমরা আশাবাদী। আমাদের প্রত্যাশা লকডাউন শেষ হলেই যেন দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ করে বিচারকাজ শেষ করা হয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে শারমিন বলেন, ‘ওসি প্রদীপ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দিলেও সে অপরাধের দায় থেকে নিষ্কৃতি পাবে বলে আমার মনে হয় না। প্রদীপ হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রদান সম্পন্ন হলে আমরা ভালো একটা রায় পাব বলে বিশ্বাস করছি।

ভাই হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দুই বোন ও একমাত্র ভাই সিনহা এবং মা বাবা। আমরা সবাই খুব ক্লোজ ছিলাম। আমাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে অন্য রকম সম্পর্ক ছিল। তারা আমাদের অভিভাবক ও বন্ধু ছিলেন। ২০০৭ সালে বাবাকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। এ সময় সিনহাই আমাদের পিতার স্থান দখল করে আমাদের সাহস ও সান্ত্বনা জুগিয়েছে। এখন চোখের পানিতে এক বিশাল শূন্যতার মধ্যে কেটে যাচ্ছে সময়। বিশেষ করে আমার মা ছেলে হারিয়ে এখনো প্রায় বাকরুদ্ধ।’

সাননিউজ/এমএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

ঢাকায় বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাই...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

শেখ হাসিনাসহ ৬১ জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জে আদালতের নির্দেশে সাবেক প্রধা...

গুমের সঙ্গে জড়িতরা পার পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গ জড়িতরা পার পায়নি...

বাংলাদেশিদের পাঁচ দেশ ভ্রমণে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের ৫ দেশে যেতে চাওয়া বাংলাদেশিদের জন...

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ও...

কলম্বিয়ায় গেরিলা হামলায় নিহত ৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলম্বিয়ার আনোরিতে ন্যাশনাল লিবারেশন আর্ম...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা