সান নিউজ ডেস্ক: করোনা মহামারির প্রভাবে দেশে ফেরত আসা প্রবাসীকর্মীদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিকখাতে কর্মসংস্থান তৈরিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, একনেকে ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং ৪২৫ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে। অনুমোদিত ১০ প্রকল্পের মধ্যে সাতটি নতুন প্রকল্প এবং তিনটি সংশোধিত প্রকল্প।
এম এ মান্নান বলেন, ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক’ শীর্ষক যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, এর আওতায় কোভিডের কারণে বিদেশফেরত ২ লাখ কর্মীর প্রত্যেককে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রকল্প ব্যয়ের ৪২৫ কোটি টাকা বিশ্বব্যাংক ঋণ সহায়তা দেবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, নানা কারণে অভিবাসী কর্মীরা দেশে ফিরে এসেছেন। অভিবাসন দেশের উন্নয়নে দীর্ঘ সময় তারা কাজ করেছেন। এখন সময় এসেছে এসব দক্ষকর্মীদের দেশের জন্য কাজে লাগানোর।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, কোভিডের প্রভাবে প্রায় ৫ লাখ প্রবাসীকর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে ২ লাখ শ্রমিককে এ প্রকল্পের আওতায় সহায়তা দেওয়া হবে। কোভিডের কারণে যেসব অভিবাসীরা দেশে ফেরত এসেছেন, প্রকল্পের আওতায় সেই প্রত্যাগত কর্মীদের তথ্যসমৃদ্ধ ডাটাবেইজ তৈরি করা হবে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরীফা খান বলেন, প্রথম পর্যায়ে ২ লাখ শ্রমিককে সহায়ত প্রদান করা হবে। তবে পরবর্তীতে এর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান। প্রত্যেক কর্মীকে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে যেটা দেওয়া হবে, এতে শ্রমিকদের প্রাথমিক খরচ মেটানোর পাশাপাশি উৎপাদনশীল কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয় সনদ পেতে সহায়ক হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হেল্প ডেস্ক থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফেরত আসার তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রকল্পের আওতায় কোভিডের প্রভাবে বিদেশফেরত কর্মীদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন কাজে দক্ষ ২৩ হাজার ৫০০ কর্মীকে বাছাই করা হবে। এরপর স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের সনদের ব্যবস্থা করে দেশে-বিদেশে চাকরির পেতে সহযোগিতা প্রদানের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কর্মীদের আর্থিক, কারিগরি ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপন ও ঋণ পেতে সহযোগিতা দেওয়া হবে। একইসাথে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন উৎপাদনশীল কার্যক্রম ও ছোট ব্যবসায় উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড জানুয়ারি ২০২১ হতে ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
সাননিউজ/এমআর