নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস থেকে শিগগির মানবজাতি মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব এই মহামারির প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা করছে এবং শিগগির তা আবিষ্কার হবে বলে তিনি আশাবাদী।
রবিবার (১০ মে) কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় তার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং ব্যক্তির কাছ থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। এতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
যারা অনুদান দিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে আজকে এমন একটা অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছে যেটা কখনো কেউ ভাবতেই পারে নাই যে এমন একটা যুদ্ধ সবাইকে করতে হবে। মানুষ যুদ্ধ করে শত্রুকে সামনে রেখে। কিন্তু এটা একটা অদৃশ্য শক্তি, একটা ভাইরাস। এর কারণে একদিনে যেমন মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। অনেকই মৃতুবরণ করেছে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যাটা রয়েছে। আমার মনে হয়, এই ধরনের ঘটনা আর কখনো সারা পৃথিবীতে ঘটেনি। যুদ্ধ হয়েছে যেখানে সব এলাকার মানুষ কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এটা এমন একটা অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ, এখানে যতবড় অস্ত্রধারী বা সম্পদশালী হোক না কেন কারো যেন কিছুই করার নাই। সবাই অসহায়। আবার এটাও ঠিক, এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে সকলেই এক হয়ে গেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটা বিষয় দেখা যাচ্ছে, প্রকৃতি যেন মুক্তি পেয়েছে। আমাদের সভ্যতার বিকাশের ফলে প্রকৃতি যে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছিল, নানাভাষে দূষণ হচ্ছিল সেটা থেকে মুক্তি পেয়েছে। এটা একটা অদ্ভুত পরিবেশ।'
করোনাভাইরাসে আমাদের অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ দৈনন্দিন জীবনে যারা কাজ করে খেতো তাদের সেই কাজের পথ বন্ধ। লেখাপড়া বন্ধ। অনেক ধরনের আমাদের কর্মসূচি চলতো সেগুলো বন্ধ। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম যেটা আমরা টেলিভিশন, রেডিওসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করতে হয়েছে। কিন্তু নানা প্রস্তুতি থাকার পরেও করোনার কারণে আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী করতে পারিনি। মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের কথা চিন্তা করে আমরা সেই সব কর্মসূচিও স্থগিত করে দিয়েছি। অনেক মানুষ আজকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের জীবন যাপন করাটাই কষ্টকর। যদিও আমরা তাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করার জন্য চেষ্টা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন যখন প্রায় সমস্ত কাজই বন্ধ। তখন আমাদের কৃষিই হচ্ছে একমাত্র..। সেই কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বব্যাপী যে দুর্ভিক্ষের আলামত দেখা যাচ্ছে, যে মহামারির কথা বলা হচ্ছে তাতে যেন আমাদের দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। অন্তত তাদের খাদ্য নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত হয়। আমরা সেই দিকে দৃষ্টি দিয়েছি। এবার ব্যাপক ধান উৎপাদন হয়েছে। আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব নাই।'